সাড়ে তিন কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে সহকারী কর কমিশনার মেজবাহউদ্দিন আহমদকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ–আইআরিড মঙ্গলবার এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপনে জারি করে।
করের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজ হিসাবে জমা রাখার অভিযোগ উঠে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
আইআরডির এক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মে খুলনার কর অঞ্চলের উপ কর-কশিনার খন্দকার মো. তারিফ উদ্দিন খুলনা মহানগর আদালত (খালিশপুর) অঞ্চলে মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, ২০১৭ সালের ৮ মে থেকে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা কর অঞ্চলের অধীনস্থ কর সার্কেল বাগেরহাট, খুলনা ও মোংলায় দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় করদাতাদের দেয়া ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪১৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখায় জমা দেন।
পরে ৪০টি চেকের মাধ্যমে ওই টাকা তুলে আত্মসাৎ অভিযুক্ত মেজবাহ উদ্দিন। এর মধ্যে বাগেরহাটে থাকাকালীন দুই কোটি ১০ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ টাকা এবং মোংলা, কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা ও মাগুরায় থাকাকালীন সময়ে এক কোটি ৩৭ লাখ ১০ হাজার ৬ টাকা আত্মসাৎ করেন।
মামলার পর ২০১৯ সালের ১৯ মে মেজবাহকে সাময়িক বরখাস্ত করে খুলনা কর অঞ্চল। ওই বছরের ১৬ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তিনি জবাব দেন। তবে তার বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তাকে সাময়িক বরাখাস্ত করা হয়।
একই সঙ্গে আইআরডির এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই তদন্তেও অভিযোগ প্রমাণ হয়। গত মাসে সেই প্রতিবেদন এনবিআরে জমা দেয়া হয়।
ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মঙ্গলবার আইআরডির এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সহকারী কর কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ করের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজ অ্যাকাউন্টে জমা রেখে অর্থ আত্মসাৎ করেন, যা বিদ্যমান সরকারি কর্মচারী বিধিমালা লঙ্ঘনের শামিল। তদন্তে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হলো।’