দেশে নিত্যপণ্যের দাম ভোক্তা পর্যায়ে সহনীয় রাখতে রমজানের আগেই ব্যবসায়ীদের সব পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়ে নিরাপদ মজুদ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাজার হস্তক্ষেপে সরকারের সক্ষমতা বাড়াতে টিসিবির মাধ্যমেও মজুদ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
রোববার ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী এই পরামর্শ দেন।
সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাজার পরিস্থিতি সরকার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এর পাশাপাশি দেশে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মজুদ, সরবরাহ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতেও সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।’
তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে দেশে ভোজ্যতেলের দামে অসঙ্গতি সরকার বরদাশত করবে না। কৃত্রিমভাবে কাউকে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হবে না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি এখন ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যের দামে আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির সঙ্গে অসঙ্গতি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে।’
এ সময় টিপু মুনশি বাজার পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে বলেন, ‘সরকার ব্যবসা করতে চায় না। ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা করবে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা সরকারের জনকল্যাণের অংশ। তাই সরকারও চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের মজুদ ক্ষমতা বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে আসন্ন রমজানে পণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে বিগত যেকোনো বছরের চেয়ে এবার পণ্য বিক্রয়ের পরিমাণ সরকার তিনগুণ বাড়াবে। টিসিবির মাধ্যমে এসব পণ্য প্রতি বছরের মতো সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয় করা হবে ‘
সূত্র জানায়, বৈঠকে আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা সম্পর্কিত পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেশীয় বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দামের অসঙ্গতি চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় ভোজ্যতেলের বাড়তি দামের বিষয়টি সুস্পষ্ট হলে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নানা জটিলতা তুলে ধরেন। তারা আমদানিতে বিদ্যমান সমস্যার সুরাহা, ভোজ্যতেলে তিনস্তরে ভ্যাট একস্তরে নামিয়ে আনাসহ সরকারের নীতি সহায়তা দাবি করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের এসব সমস্যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট লিয়াজোঁ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করে তা দূর করার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. ওবায়দুল আজম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রি. জে. মো. আরিফুল হাসান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।