দেশের আমদানি রপ্তানির বিপরীতে যে পরিমাণ বিমা পলিসি করা হয় তার অর্থের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা –আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে আমদানি রপ্তানির বাজারে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার পলিসি খোলা হয়। কিন্ত বিমা কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে পাওয়া যায় মাত্র ২৮শ থেকে সর্বোচ্চ ৩২শ কোটি টাকা। তাহলে বাকি ২৮শ কোটি টাকা কোথায়?’
রোববার রাজধানীর ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ) মিলনায়তনে ‘বাণিজ্য প্রতিদিনের’ উদ্যোগে ‘বিমা খাতের প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন মোশাররফ।
আমদানি-রপ্তানির বিমায় এক বিপুল পরিমাণ অর্থ হারিয়ে যাওয়া রোধে কাজ চলছে জানিয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘এর জন্য আমরা বিমা কোম্পানিগুলোকে একটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পলিসি খোলার আহ্বান জানিয়েছি। এসব পলিসির লেনদেন যেন ব্যাংক চ্যানেলের মাধ্যমে হয় তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর এর সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে।’
মোশাররফ বলেন, ‘এ ধরনের পলিসিতে সরকারকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করতে হয়। বড় অংকের এই অর্থ আর্থিক বিবরণীতে না থাকায় সরকার কম হলেও প্রায় চারশ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।’
সেমিনারে জানানো হয়, বর্তমান সরকার বিমা খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। করা হচ্ছে অটোমেশন, জনবল দক্ষ করতে দেয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আস্থার সংকট এখন বিমা খাতের উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। কোনো একটি পলিসি করা মানে একজনকে বিমা করানো নয়, বরং সেই কোম্পানির সুনাম ওই গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা।’
তিনি বলেন, ‘বিমাকারী যখন বিমা এজেন্টদের কাছ থেকে প্রতারিত হন তখনেই মূলত আস্থার সংকট তৈরি হয়, যা তার আসে পাশের সবাই তা অবগত হয়। এজন্য বিমা কোম্পানিগুলো নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ’
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান আধ্যাপক মিজানুর রহমান, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমির প্রধান ইবরাহীম হোসেন।
অনুষ্ঠানে মুলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন। সঞ্চালনা করেন গিয়াস উদ্দিন।