বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্রমিক বিক্ষোভে বন্ধ আকিজ বিড়ি কারখানা খুলবে কবে

  •    
  • ২১ জানুয়ারি, ২০২১ ১৫:২৪

গত ৯ জানুয়ারি বিক্ষোভের পর বন্ধ করে দেয়া কারখানাটি খোলার কথা ছিল ১৪ জানুয়ারি। কিন্তু ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও সেটি এখনও খোলা হয়নি। এতে সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।

কারখানা খোলার কথা ছিল পাঁচ দিন পর। কিন্তু ১২ দিন পরেও বন্ধ কারখানা। জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সাড়ে তিন হাজার বিড়ি শ্রমিক।

শ্রমিক আন্দোলনের পর গত ৯ জানুয়ারি বন্ধ ঘোষণা করা হয় কুষ্টিয়ার আকিজ বিড়ি কারখানা। পরে প্রশাসনের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা শেষে পাঁচ দিন পর কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও খোলা হয়নি।

কারখানা বন্ধ, বেতন নেই, এতে অভাব চরম অনটনে পড়েছেন শ্রমিক।

শ্রমিক নেতারা এখন ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এর মধ্যে সমাধান না হলে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

গত ৯ জানুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের হোসেনাবাদ এলাকায় কারখানার সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে নানা অভিযোগ।

ওইদিন সকাল সাতটায় কারখানায় প্রবেশ করতে পারেনি কয়েকজন শ্রমিক। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে দরিদ্র এসব শ্রমিকরা অনেক দূর থেকে হেঁটে আসেন কারখানায়।

সাতটা পেরিয়ে গেলেই দ্বাররক্ষী ফটক বন্ধ করে দেন। ঢুকতে না পারা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তা বিক্ষোভে রূপ নেয়।

আগের প্রবেশ করা সব শ্রমিক কারখানা থেকে বেরিয়ে এতে যোগ দেন। আসেন আশপাশের অন্য কারখানার শ্রমিকরাও। বন্ধ হয়ে যায় কারখানার সামনের সড়ক।

এক পর্যায়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে আসে পুলিশ। তারা প্রথমে লাঠিপেটা, পরে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। এক পর্যায়ে করে গুলি।

দুপুরের দিকে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।

শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়া গুছিয়ে বলতে না পারলেও মজুরি দ্বিগুণ করা, কর্মঘণ্টা আট ঘণ্টা নির্ধারণ, অসুস্থতা বা পড়ালেখার মতো কারণ থাকলে দুই চার মিনিট বিলম্ব হলেও কারখানায় ঢুকতে দেয়ার দাবি জানান।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে আলাপ করে পাঁচ দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে তিনটার দিকে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে চলে যায়।

তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগই নেয়নি। আর্থিকভাবে দরিদ্র পরিবারগুলো মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। শ্রমিকপাড়ায় মাটির ও ছনের ঘরে অভাবের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

শ্রমিকদের অন্যতম নেতা বিল্লাল হোসেন বলেছেন, কারখানা না খুললে এবং তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আন্দোলনে নামবেন আবার।

তিনি বলেন, কারখানা বন্ধ থাকলে নিজেদের ক্ষতি হলেও শ্রমিকদের অভাবে ফেলে তারা আন্দোলন দমাতে চাইছে মালিকপক্ষ।

আকিজ বিড়ি কারখানার শ্রমিক মহম্মদ নান্নু মিয়া বলেন, ‘কারখানা বন্ধ থাকায় আমরা আর্থিক অনটনে পড়েছি। মালিকপক্ষ আমাদের এভাবে সাইজ করছে।’

মোহাম্মদ বজলু নামে আরেকজন বলেন, ‘অন্য কোনো কাজ নেই। কারখানায় এভাবে বন্ধ থাকলে না খেয়ে মরতে হবে।’

প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে মনে করিয়ে দিলে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এজাজ আহম্মেদ মামুন নিউজবাংলাক বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কাজে যশোর এসেছি। বিষয়টা নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে এবং শ্রমিকদের সাথে আরও কথা বলা দরকার। এর মধ্যে আমাদের এমপি সাহেব দেশে নাই। উনি ভারত থেকে ফিরলে একটি ভালো সমাধান হবে আশা করি।’

দৌলতপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী বলেন, ‘আমরা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বুধবারও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। উভয়পক্ষের সাথে আরও কথা বলা দরকার। এমপি সাহেব দেশে আসলে সমাধান হয়ে যাবে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশাহ এখন ভারতে অবস্থান করছেন। তার ফেরার দিন এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

আকিজ গ্রুপ জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে এ কারখানাটি পরিচালনা করে। মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য।

কারখানার ম্যানেজার আরিফুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে চাই না।’

এ বিভাগের আরো খবর