ব্যাংক খাতে ঋণ অনুমোদন, বিতরণ ও আদায়ের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে ৯ সদস্যের একটি কমিটি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কমিটি ঋণ সংক্রান্ত দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরামর্শ দেবে।
ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় ব্যাংকঋণের ওপর সুদ মওকুফসংক্রান্ত বিষয় তদন্ত এবং তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নে কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে এই কমিটি করার নির্দেশনা দেয়া হয়।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে রিটটি করে। সংগঠনটি তখন ব্যাংক খাতের ২০ বছরের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তথ্য তুলে ধরে।
সেই রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৯ সালের নভেম্বরে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের রায় দেন।
ওই রায় অনুযায়ী কমিটির সদস্য বাছাইয়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ব্যাংকারকেও চিঠি দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংক সংস্কার কমিটি গঠনের কাজ চলছে। সরকারও চায় এ ধরনের কমিটি করতে। দ্রুত এ কমিটি গঠন করা হবে বলেও আশা করেন তিনি।
ব্যাংক খাতের সুশাসনের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের বিষয়ে সরকার আগ্রহ দেখালেও এখন পর্যন্ত তা কেবল আলাপ আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে আদালতের রায়ে সংস্কার কমিটি গঠন করা হলে ব্যাংক খাতের ঋণ অনিয়ম সংক্রান্ত দুর্বলতা দূর করার ক্ষেত্রে কমিটি কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাত সম্পর্কে পযাপ্ত জ্ঞান আছে, এবং একই সঙ্গে সৎ হিসেবে পরিচিতদেরকে কমিটির সদস্য নির্বাচন করতে হবে। তাহলে ওই কমিটির কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যাবে।’