বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলো এখন থেকে বছরে ১২ শতাংশর বেশি হারে সুদ নিতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগকারীদের ওপর সুদের চাপ অনেক কমবে। কারণ, এতদিন পর্যন্ত ব্রোকারেজ হাউজগুলো ১৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার নিয়ে থাকত।
তবে এই সুদহার আরও কম হতে পারে। কারণ, কমিশন জানিয়েছে মার্জিন ঋণের স্প্রেড হবে তিন শতাংশ। অর্থাৎ ব্রোকারেজ হাউজগুলো যদি আট শতাংশে ঋণ পায়, তাহলে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ শতাংশ।
হাউজের ঋণের সুদহার ছয় শতাংশ হলে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৯ শতাংশ।
বুধবার বিএসইসির ৭৫৭ তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
কমিশন সভায় সভাপতিত্ব করে চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ১ অনুপাত শূন্য দশমিক ৫ হারে ঋণ দিয়ে থাকে। অর্থাৎ কোনো গ্রাহকের এক লাখ টাকা বিনিয়োগ থাকলে তিনি ৫০ হাজার টাকা ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন।
তবে গত সেপ্টেম্বরে এ নিয়ে নতুন নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। এতে বলা হয়, মূল্যসূচক চার হাজার থেকে সাত হাজার পয়েন্টের মধ্যে থাকলে বিনিয়োগের ৫০ শতাংশ ঋণ দেয়া যাবে। আর সূচক এর উপরে উঠলে মার্জিন ঋণ দেয়া যাবে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।
মার্জিন ঋণের সুদহার কমিয়ে বেঁধে দেয়ার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আ ন ম আতাউল্লাহ নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা খুব ভালো উদ্যোগ। আমরা পূর্বের কমিশনকেও এই দাবি জানিয়েছিলাম। তারা আমলে নেয়নি। বর্তমান কমিশন যেসব উদ্যোগ নিচ্ছে, সেগুলো খুবই সময়োপযোগী। তবে সর্বোচ্চ সুদহার ১০ শতাংশ করা হলে আমরা যে লোকসানে ছিলাম, সেটা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হতো।’
জরিমানা
সভায় কমিশন আইন ভঙ্গের দায়ে দুটি প্রতিষ্ঠানসহ এক ব্যক্তিকে জরিমানাসহ একটি প্রতিষ্ঠানের বন্ডের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের দায়ে দুই প্রতিষ্ঠান ও এক ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জানা গেছে, সিএসইর স্কাইস সিকিউরিটিজকে মার্জিন ঋণ প্রদানে কমিশনের নির্দেশনা ভঙ্গের দায়ে দুই লাখ টাকার জরিমানা করা হয়েছে।
সাবভেলি সিকিউরিটিজকে দুই লাখ টাকা এবং প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত প্রতিনিধি ইকবার হোসেনের মাধ্যমে ক্রয়/বিক্রয় আদেশ ফর্মে সইবিহীন লেনদেন করায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বন্ড অনুমোদন
বৈঠকে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের চার বছর মেয়াদী আনসিকিউরড, নন-কনভার্টেবল এবং জিরো কুপন বন্ড অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বিভিন্ন ফান্ড এবং করপোরেটসসহ অন্যান্য যোগী বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
এই অর্থ দিয়ে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের চলমান আর্থিক চাহিদা পূরণ করবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের মূল্য ৫০ লাখ টাকা।