প্রথমবারের মতো দেশে শুরু হয়েছে অনলাইনে সর্ববৃহৎ উদ্যোগ তিন দিনের বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) সম্মেলন।
‘ডিসিসিআই বিজনেস কনক্লেভ ২০২১’ নামের এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০টি দেশের ২২৭ উদ্যোক্তা এবং দেশি-বিদেশি ৩৪ রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার।
‘বিজনেস কনক্লেভ’ হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈশ্বিক ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সুযোগ ও সম্ভাবনা যাচাই এবং করণীয় নির্ধারণের একটি সমঝোতা উদ্যোগ। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (ডিসিসিআই) এর আয়োজন করছে।
সম্মেলনে অ্যাপারেল ও টেক্সটাইল, হালকা প্রকৌশল, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা প্রভৃতি খাতকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ থেকে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের উপস্থিতিতে ১৭৬টি বিজনেস-টু-বিজনেস ম্যাচ-মেকিং ইভেন্ট সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এর মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ারও আশা করছেন আয়োজকেরা।
মঙ্গলবার আয়োজনের উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উৎপাদনশীল শিল্পের বৈশ্বিক কেন্দ্রস্থল। সেই লক্ষ্য অর্জনে তিনি বর্তমান সরকারের জোরদার ইকনোমিক ডিপ্লোমেসি বা অর্থনৈতিক কূটনীতি গ্রহণের কথাও জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘এই অর্থনৈতিক কূটনীতির কারণেই বাংলাদেশ এখন সার্ক ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সরকারের সার্বিক কর্মকাণ্ডেও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ, দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ, তথ্য-প্রযুক্তি আদান-প্রদান এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের অভিগম্যতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্ববাজারে এর দৃশ্যমান সুফল পাওয়া যাবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়া ও কৃষিজাত পণ্য, পাট পণ্য, সিরামিক এবং জাহাজ নির্মাণ খাত খুবই সম্ভাবনাময়। বিজনেস ক্লেভে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের আকর্ষণীয় ও বহুমুখী বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণ করে এসব খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন আশা করতেই পারি।’
তিনি বলেন, ‘মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে এখন মাদার ভেসেল ভিড়তে শুরু করেছে। এ উদ্যোগ বৈদেশিক বিনিয়োগে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।’
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিদেশি উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। তিনি বলেন, ‘ডিসিসিআই বিজনেস কনক্লেভ ২০২১’- আয়োজন অংশগ্রহণকারী দেশসগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করবে এবং একই সঙ্গে দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে তা বহুগুণে বৃদ্ধি করবে।’
ডিসিসিআইর সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ করোনা পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা গ্রহণের জন্য উদ্যোক্তাদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে তিনি দেশের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণেও গুরত্বারোপ করেন।
বিজনেস ইনিশিয়েটিভ ফর লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)-এর চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় এবং এশিয়া অঞ্চলে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে দেশে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর থেকে উত্তরণে তিনি বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা’ গ্রহণের আহ্বান জানান।