দেশের শেয়ারবাজারে এবার লেনদেনের পরিমাণ ছাড়াল আড়াই হাজার কোটি টাকা। ২০১০ সালের মহাধসের পর এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড।
তবে রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দাম। যদিও দিনের শুরুটা হয়েছিল উত্থানে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় সূচক বাড়ে দিনের সর্বোচ্চ ১৬০ পয়েন্ট। লেনদেনও পৌঁছে যায় দেড় হাজার কোটি টাকায়। কিন্তু বেলা ১২টার পর থেকেই বাড়তে থাকে শেয়ার বিক্রির চাপ।
ফলে কমতে থাকে দর, যার প্রভাবে দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪৩ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৬১০ পয়েন্টে নেমে আসে।
এদিন বাজারে বিক্রেতা যেমন ছিল, তেমনি ছিল ক্রেতাও। আর এ দুপক্ষের সক্রিয়তায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে লেনদেন।
ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় দুই হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। এর চেয়ে বেশি লেনদেনটি ছিল ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর, দুই হাজার ৭১০ কোটি টাকা।
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী মুনাফায় থাকায় শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। এটা স্বাভাবিক। বিক্রির প্রবণতা বাড়লে সূচকে তার প্রভাব পড়বে। বাজারে সেটিই ঘটেছে।
ডিএসই পরিচালক রকিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সূচক নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দেখতে হবে লেনদেন কেমন হচ্ছে। লেনদেন ভালো হলেই বুঝতে হবে বাজার তার গতি ধরে রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিএসইসির যে উদ্যোগ সেগুলো যে বিনিয়োগকারী বান্ধব, পুঁজিবাজার বান্ধব তার প্রতিচ্ছবি হচ্ছে আজকের পুঁজিবাজার। কয়েকদিন দাম বাড়লে এক-দুইদিন শেয়ার বিক্রির চাপ থাকবেই।’
মঙ্গলবারের বিনিয়োগকারীদের পছন্দের খাত ছিল ব্যাংক। তালিকাভুক্ত ৩০টির মধ্যে ২৭টি ব্যাংকের শেয়ারের দামই বেড়েছে। কমেছে মাত্র একটি আর অপরিবর্তীত ছিল দুটির দর।
মোট লেনদেনে ব্যাংক খাতের অবদান ছিল ৪৬০ কোটি টাকা।
একই ধারায় ছিল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জও (সিএসই)। সেখানকার সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৩৬ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ১৫৫ কোটি টাকা।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টির, কমেছে ১৪৯টির ও অপরিবর্তী ছিল ৩৪টির।
আর ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৩টির, কমেছে ১৯৭টির এবং অপরিবর্তীত ছিল ৫০টির।
স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়ে শীর্ষে ছিল ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। ৯ শতাংশের উপরে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় আরও ছিল পাওয়ার গ্রিড লিমিটেড, রবি ও জিবিবি পাওয়ার।
এদিন প্রথমবারের মতো বেক্সিমকো লিমিটেডকে পেছনে ফেলে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে রবি আজিয়াটা। কোম্পানিটির ৬ কোটি ৫৪ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫৬ কোটি টাকায়।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার ৮২ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬৪ কোটি টাকায়।
এছাড়া বেক্সিমকো লিমিটেডের ২ কোটির বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৭ কোটি টাকায়।