ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় গত সাড়ে তিন মাস ধরে পেঁয়াজের বাজার ছিল গরম। চাষিরা আশায় ছিলেন, ভালো মুনাফা পাবেন এবার।
তবে বাংলাদেশ ও ভারতের উৎপাদনের মৌসুম প্রায় একই সময়ে। দেশের চাষিরা যখন পণ্যটি বাজারে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন ভারত আবার রপ্তানি উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
ভারত থেকে এলে দাম কমবে পেঁয়াজের। আর এ কারণে উদ্বেগে চাষিরা।
সাতক্ষীরায় পেঁয়াজ সেভাবে চাষ না হলেও এবার দাম ভালো হওয়ায় আবাদে আগ্রহী হয়েছিলেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগের হিসাবে জেলায় এ বছর ৫০০ হেক্টর জমিতে ফসলটির চাষ হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয় পাঁচ হাজার টন।
তবে উৎপাদন ভালো হলেও পেঁয়াজ আমদানির খবরে চাষিদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সাড়ে তিন মাস বন্ধ রাখার পর গত ২৮ ডিসেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ঘোষণা দেয়। শনিবার দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে আসে প্রথম চালান। এরপর থেকেই কমে যেতে থাকে দাম।
তালা উপজেলার ধান্দিয়া গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম ৩৫ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আশা করছেন ৯০ মণের মতো ফসল উঠবে।
তিনি জানান, কয়েক দিন আগেও প্রতি মণ পেঁয়াজে দাম পেয়েছেন দেড় হাজার টাকা। তবে পরে দাম কমে হয় এক হাজার ২০০ টাকা। এখন তা কমে এক হাজার টাকার নিচে নেমেছে।
এভাবে দাম কমলে শেষ পর্যন্ত লোকসানের আশঙ্কায় রিয়াজুল।
একই এলাকার আব্বাস আলী বলেন, ‘কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সরকারের সেদিকে নজর দেয়া উচিত। না হলে আগামীতে পেঁয়াজ চাষে উৎসাহ হারাবেন চাষিরা।’
একই উপজেলার আড়তদার রোকনুজ্জামান জানান, সপ্তাহখানেক আগেও দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। শনিবার ভারত থেকে আমদানির খবরে সেই পেঁয়াজই এখন ২৮ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাতক্ষীরা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলাটিতে পেঁয়াজের চাহিদা ২০ হাজার টনের মতো। বাকি চাহিদা ভারত থেকে আমদানি করা এবং দেশের অন্য জেলা থেকে আনা পেঁয়াজ দিয়ে পূরণ করা হয়।
সরকার অবশ্য এই চাষিদের উদ্বেগ আমলে নিয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় তারা পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন।
সাড়ে তিন মাস আগে ভারত যখন পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন অন্য দেশ থেকে আমদানিতে উৎসাহ দিতে সরকার শুল্ক তুলে নিয়েছিল।