দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর মাতারবাড়ীতে জাহাজ আসার ঘটনাটি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য একটি শুভ বার্তা হিসেবে দেখছে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- বিডা।
সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘এ ধরনের বড় জাহাজের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হলে দেশে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় অনেকাংশে হ্রাস পাবে। পাশাপাশি সময়ও বাঁচবে। এতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আস্থা বাড়বে।’
সোমবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন ডিসিসিআই এর নবনির্বাচিত সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিডা কার্যালয়ে যান। এ সময় সিরাজুল ইসলাম এই মন্তব্য করেন।
মাতারবাড়ীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কৃত্রিম চ্যানেল খনন করে জাহাজ ভেড়ানোর কাজ শুরু হয়েছিল। পরে সেটিকে সমুদ্র বন্দরের রূপ দিতে কাজ শুরু করে সরকার। জাপানের সংস্থা জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ডিসিসিআইয়ের নবনির্বাচিত সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিডা কার্যালয়ে যান
প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের মধ্যে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা।
প্রথমবারের মতো কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী বন্দরের জেটিতে জাহাজ ভিড়েছে গত মঙ্গলবার সকালে। পানামার পতাকাবাহী ‘ভেনাস ট্রায়াম্ফ’ নামের জাহাজটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ নিয়ে জেটিতে ভেড়ে।
‘ভেনাস ট্রায়াম্ফ’ একটি সাধারণ মালবাহী জাহাজ। ২০০৯ সালে নির্মিত জাহাজটি ১২০ মিটার লম্বা। এর ওজন নয় হাজার ৬৮০ টন।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, ‘গতবছর ১১৭টি জাহাজ মোংলাবন্দর ব্যবহার করেছে, যেটি দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের মাঝে এ বন্দর ব্যবহারের আস্থার বিষয়টিতে বহন করে। আর তাই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২০ সালে দেশে স্থানীয় বিনিয়োগ বিগত বছরের চেয়ে প্রায় ২৭ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেটি আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সক্ষমতারই বহিপ্রকাশ।’
ভেনাস ট্রায়াম্ফ নামের জাহাজটি ১২০ মিটার লম্বা
দেশের ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে বিশেষত সমুদ্র ও স্থলবন্দর সমূহের সঙ্গে সড়ক, রেল ও নৌপথে যোগাযোগ আরও আধুনিক করা হবে বলেও জানান বিডা চেয়ারম্যান। বলেন, ‘পদ্মা সেতু এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে এবং যেটি চালু হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পায়নের ধারা বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।’
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রয়োজনীয় সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন ও বিদ্যমান নীতিমালার সংষ্কার জরুরি।’
উদ্যোক্তাদের সেবা প্রাপ্তির প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করতে এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিসকে আরও সম্প্রসারণে বিডাকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এন কে এ মবিন, সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং মহাসচিব আফসারুল আরিফিনও মত বিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন।