পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়ছেই। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসের শুরুতেই ব্যাপকভাবে শেয়ার কিনছেন বিনিয়োগকারীরা। বেড়ে চলেছে লেনদেন।
রোববার সকাল ১০টা থেকে লেনদেন শুরুর পর থেকেই চাঙ্গাভাব দেখা যায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। বেলা ১১টার পর লেনদেন ছাড়ায় হাজার কোটির ঘর।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে নতুন নেতৃত্ব আসার পর থেকে নানা সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারে প্রাণ ফেরে। প্রায় সব খাতেই শেয়ারে দেখা যায় চাঙ্গাভাব।
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর এর আগে কখনও বাজার নিয়ে এত আশাবাদ তৈরি হয়নি।আরও পড়ুন: আস্থার প্রতিদান পাচ্ছে শেয়ারবাজার
গত ২৯ ডিসেম্বর পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় পুঁজিবাজারে। শেয়ারের দাম বাড়ায় বাড়ে সূচকও।
বেলা ১২টায় লেনদেন প্রায় এক হাজার একশ কোটির ঘরে দাঁড়ায়। সূচক বাড়ে ১৬৮ পয়েন্ট।
শতকরা হিসাবে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। গত এক মাস ধরেই কোম্পানিটির শেয়ারে উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি কোম্পানিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়ার পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সর্বোচ্চ পরিমাণে বাড়ে এর শেয়ার দর। নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানিটির দর ১০ শতাংশের বেশি বাড়ার সুযোগ নেই।
গত কয়েকদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তুঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন অপারেটর রবির শেয়ার দরও বেড়েছে সর্বোচ্চ পরিমাণে। ১৫ টাকা দিয়ে লেনদেন শুরু করা কোম্পানিটির দর পঞ্চম কার্যদিবসে দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৭০ পয়সা।
বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ আগ্রহে আছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। টাকার অংকে শুরু থেকেই সবচেয়ে বেশি লেনদেন হচ্ছে এই কোম্পানিটির। অক্সফোর্ডের করোনার যে টিকা আনতে যাচ্ছে সরকার, সেই চুক্তিতে আছে বেক্সিমকো ফার্মা। এই চুক্তি করার পর থেকেই কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছিল। যুক্তরাজ্য এই টিকা অনুমোদনের পর প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১৮ টাকার বেশি।
বাজারে প্রাণ ফেরায় ফিরছেন বিনিয়োগকারীরাও।
বিনিয়োগকারী নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে একটি বিও হিসাবে লেনদেন হয়নি। অন্যগুলোতে লেনদেন করেছি। বিএসইসির নতুন নিয়মে আইপিও পেতে হলে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে- এমন ঘোষণায় অপর বিও হিসাবটিও সচল করতে টাকা জমা দিয়ে লেনদেন শুরু করেছি।
‘আশা করি এপ্রিলের আগেই ওই বিও হিসাবে ২০ হাজার টাকার বেশি বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে।’
সম্প্রতি বিএসইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনো বিও (বেনিফিশারি ওনার) হিসাবে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকলে আইপিও আবেদন করলেই আনুপাতিক হারে শেয়ার মিলবে। এই বিধান কার্যকর হবে আগামী ১ এপ্রিল থেকে।
ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও সক্রিয় হয়েছে বাজারে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ সুবিধা দিয়ে ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে।
এ ছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বাজার চাঙ্গা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল চেয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।