সরকারি মালিকানাধীন চিনিকলগুলো বন্ধ না করে কারখানা আধুনিকায়ন ও দুর্নীতি দূর করে চিনিকলগুলো লাভজনকভাবে চালানো সম্ভব।
শনিবার রাজধানীতে ১৬টি চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারী ও আখচাষীদের ছেলেমেয়েদের সংগঠন সুগারমিলস চিলড্রেন্স ফোরামের মানববন্ধনে এ কথা বলা হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সংগঠনটির সদস্যরা বলেন, চিনিকলগুলোর লোকসানের জন্য গুটিকয়েক লোকের দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা দায়ী হলেও হাজার হাজার সাধারণ শ্রমিক আর আখচাষীদের ওপর এ দায় চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তারা বলেন, বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও মিলগুলোতে হাজার হাজার টন অরগানিক চিনি অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে থাকে। বিপণন ব্যবস্থার অদক্ষতাই এজন্য দায়ী।
মানবন্ধনে বলা হয়, চলতি মৌসুমে আখমাড়াই বন্ধ করে ছয়টি মিলের হাজার হাজার আখচাষী ও শ্রমিক কর্মচারীর জীবিকা হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। কৌশলে আখচাষীদের ভবিষ্যতে আখ উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, সারা দুনিয়ায় যখন অরগানিক চিনির কদর বাড়ছে,তখন আমাদের দেশে অরগানিক চিনি উৎপাদনকারী সরকারি চিনিকল বন্ধের অপচেষ্টা চলছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশে সরকারি চিনিকল ছাড়া বেসরকারি খাতে কোনো চিনিকল নেই। বেসরকারি খাতে কয়েকটি রিফাইনারি আছে, যারা বিদেশ থেকে তরল চিনি এনে এখানে পরিশোধন করে। কর্মসংস্থান ও কৃষিতে এর কোনো অবদান নেই।
চিনির পাশাপাশি সরকারি চিনিকলগুলোতে অ্যালকোহল এবং ইথানলভিত্তিক জ্বালানী পণ্য উৎপাদন করে তা রপ্তানি করা সম্ভব। কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চিনিকলে এ প্রক্রিয়ায় প্রতিবছর ব্যাপক মুনাফা হচ্ছে।
মানবন্ধনে বলা হয়, গত কয়েক দশকেও অধিক ফলনশীল আখ উৎপাদনে সরকার মনোযোগী হয়নি। অথচ ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে অধিক ফলনশীল আখচাষ করা হচ্ছে যার ফলে কৃষক ও চিনিকল উভয়ই লাভবান হচ্ছে।
বাংলাদেশে আখের ফলন একর প্রতি ১৫ টন, অথচ উন্নত জাত দিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় একর প্রতি ৪৫ টন এবং আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় একর প্রতি ৭০ টন আখের ফলন পাওয়া যায়।
দেশের মিলগুলোয় পুরনো যন্ত্রপাতির কারণে আখ থেকে চিনি আহরণের হারও কম, গড়ে সাত শতাংশ। অথচ অন্যান্য দেশে এই হার ১৫ শতাংশ। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।