বিশেষ সুবিধায় খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করেছেন বা এককালীন পরিশোধের সুযোগ পেয়েছেন এমন গ্রাহকরাও কারোনাকালে কিস্তি পরিশোধের হাত থেকে মাফ পেলেন।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেয়া ছাড় বিশেষ সুবিধার আওতায় খেলাপি ঋণ নিয়মিত করা গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
এ ক্ষেত্রে এককালীন এক্সিট সুবিধা নেয়া গ্রাহকদের চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যে কিস্তি দেয়ার কথা ছিল, তা না দিলে তারা আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময় পাবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চলতি বছর জুড়েই ঋণগ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে ছাড় দেয় হয়। সেখানে সব ধরনের গ্রাহকের কথা বলা ছিল। সেই হিসাবে, পুনঃতফসিল বা এককালীন পরিশোধের সুযোগ পাওয়া গ্রাহকরা এই সুবিধা পান। তবে ব্যাংকগুলো এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা চাওয়ায় নতুন করে এই সর্কুলার জারি করা হয়।’
ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ২০১৯ সালের ১৬ মে বিশেষ সুবিধায় এই ঋণগুলো নতুন করে পরিশোধ করার সুযোগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ক্ষেত্রে এককালীন নগদ জমার (ডাউনপেমেন্ট) হার দুই শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। যেখানে প্রচলতি নিয়মে সর্বনিম্ন পাঁচ শতাংশ ডাউনপেমেন্টের বাধ্যবাধকতা ছিল।
এ ছাড়া নতুন করে ঋণের সুদ নির্ধারণ করা হয় সর্বোচ্চ নয় শতাংশ। সেখানেও ছাড় পান খেলাপি গ্রাহকরা।
এককালীন এক্সিটের ক্ষেত্রে বার্ষিক কিস্তিতে ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয় খেলাপিদের।
তবে ওই সার্কুলারের নির্দেশনা নিয়ে আদালতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলে। রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে যাওয়ায় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ বিশেষ সুবিধায় নিয়মিত করা হয়। ফলে কমে আসে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ।
চলিত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।