পুঁজিবাজারে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের লেনদেন হলো সাত দিন। আর ‘রবি’র লেনদেন হয়েছে মঙ্গলবারসহ চার দিন। এর মধ্যে শেয়ার সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি দুই কোম্পানির। প্রতিদিনই সর্বোচ্চ দাম বেড়ে হচ্ছে হল্টেড (শেয়ার বিক্রেতাহীন)।
চলতি মাসের ২১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে বিমা খাতের কোম্পানি ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। আর ২৪ ডিসেম্বর লেনদেন শুরু হয় টেলিকমিউনিকেশন খাতের কোম্পানি রবির।
ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম দুই দিন দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ করে। অর্থাৎ প্রথম দুই দিনে ১০ টাকার শেয়ার হয়েছে সাড়ে ২২ টাকা। তারপর পাঁচ দিনে প্রতিদিন ৯ শতাংশের বেশি দাম বেড়ে হয়েছে বর্তমানে ৩৫ দশমিক ৯০ টাকা। সর্বশেষ মঙ্গলবার লেনদেনেও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার বিক্রেতাশূন্য ছিল।
এ ছাড়া ২৪ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া রবির শেয়ারও মঙ্গলবার হল্টেড (শেয়ার বিক্রেতাহীন) ছিল। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর চারদিন লেনদেন হয়েছে কোম্পানিটির। প্রতিদিনিই হল্টেড ছিল। ১০ টাকার শেয়ারের দাম বেড়ে মঙ্গলবার লেনদেন হয় ২৭ দশমিক ১০ টাকায়।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কোনো সার্কিট ব্রেকার (শেয়ারের দামের লিমিট) থাকত না। ফলে প্রথম দিনই ১০ টাকার শেয়ার হতো ১০০ টাকা। এতে অনেক বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এখন প্রথম থেকেই শেয়ারের দামে লিমিট থাকায় নতুন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি বন্ধ হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তিনটি সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এরমধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১৪ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৫৮ দশমিক ২৫ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক এক দশমিক ৮১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩৩ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে। বাছাই করা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক ১২ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৩৬ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৭৫ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩০টির, কমেছে ১৬৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৫টির।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ১১৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬২টির।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, পুঁজিবাজারের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মূলত নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে দু-তিন দিন পর বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকত না। কিন্ত এখন পুরো উল্টো চিত্র। এটা পুঁজিবাজারের জন্য ভালো। আর দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার থাকায় নতুন কোম্পানি নিয়ে কারসাজিও বন্ধ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আগের দিনের মতো মঙ্গলবারও শীর্ষ ২০ কোম্পানির মধ্যে প্রথমেই ছিল বেক্সিমকো লি.। এদিন কোম্পানিটির ২ কোটি ৫৮ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকায়। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বেক্সিফার্মা। এদিন কোম্পানিটির ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি টাকায়। তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে ছিল যথাক্রমে আইএফআইসি ও লংকাবাংলা।
দাম বৃদ্ধির শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় প্রথমে ছিল ইস্টার্ণ ক্যাবলস। আগের দিনের ১৫৫ দশমিক ১০ টাকা থেকে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে দাম হয়েছে ১৭০ দশমিক ৬ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ডমিনেস স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড। আগের দিনের ৩৩ দশমিক ৩০ টাকা থেকে মঙ্গলবার ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ দাম বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬০ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে আছে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স। এদিন কোম্পাটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।