যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে শেয়ারবাজার। নব উদ্যমে ছুটছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচক। আবারও হারানো পুঁজি ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন বিনিয়োগাকীরা।
রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ১০৯ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৩২৮ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে, যা ১৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে ২০১৯ সালের ৭ জুলাই ডিএসইর সূচক পাঁচ হাজার ৩৩৩ পয়েন্ট ছিল।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৭০ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৫৯ দশমিক ৭২ পয়েন্টে।
সূচকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে হাতবদল হয়েছে এক হাজার ৫২৯ কোটি টাকার শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও বন্ড, যা গেল ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর আগের কর্মদিবসের চেয়ে ১২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা বেশি।
বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা তালিকাভুক্তির পর নব উদ্যমে ছুটছে পুঁজিবাজারের লেনদেন।
সিংহভাগ বিনিয়োগকারী বাড়তি মুনাফার আশায় রবির শেয়ার এখনও ধরে রেখেছে। কাল থেকে শেয়ারটির স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হবে। তাহলে লেনদেন আরও বাড়তে পারে।
ডিএসইর সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শেয়ারের দাম বাড়লে ভালো। বিনিয়োগকারীরা ভালো মুনাফা পাবেন। কিন্ত দাম অস্বাভাবিক বাড়লে শঙ্কাও বাড়ে। তাই যেকোনো বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত সতর্কতার সঙ্গে নেয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম অতিমাত্রায় বাড়লেও, সার্বিকভাবে বাজারে শেয়ারের আয় অনুপাতে দাম (পিই) এখনও কেনার উপযোগী। এসব শেয়ারে এখনও বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত।’
শাকিল রিজভী বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা এখন নতুন নতুন কোম্পানি পাচ্ছেন বিনিয়োগ করার। ফলে একটি বা দুটি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লেও, তাদের সামনে বিকল্পও রয়েছে।
‘রবির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আছে। তবে একে পুঁজি করে কেউ যেন বাজারে সংকট তৈরি না করে সেদিকেও নজর দিতে হবে।’
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬২টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩৮টির এবং কমেছে ৬৫টির। আর অপরিবর্তীত ছিল ৫৯ টির দাম।
সিএসইতে হাত বদল হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৪টির দর।
হাতবদল হওয়া শেয়ারের দাম ৬৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
ডিএসইতে এদিনও লেনদেনের শীর্ষ থাকা ২০ কোম্পানির মধ্যে প্রথম অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো।
কোম্পানিটির দুই কোটি ৬৭ লাখ ১১ হাজার ৭৯৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৬ কোটি টাকায়।
এরপরের অবস্থানে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির মোট পাঁচ কোটি ৭২ লাখের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি টাকায়।
দাম বাড়ার শীর্ষে ছিল রবি। তালিকাভুক্তির দ্বিতীয় দিনে কোম্পানিটির ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৮৫১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, টাকার অঙ্কে যা ১১ কোটি। এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা লংকাবাংলা ফিন্যান্সের মোট এক কোটি ৩০ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি টাকায়।