করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আর একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষিত হতে পারে। ব্যবসায়ীরা দাবি তোলার এ বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর এপ্রিলে ব্যবসায়িক ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় এক লাখ ২১ হাজার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে সরকার। এর পুরোপুরি বাস্তবায় এখনও শেষ হয়নি।
অবশ্য করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই অর্থনীতি পুরোদমে চালু হয়েছে।
এর মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা বলছে খোদ সরকার। যদিও এবার আগের বারের মতো সাধারণ ছুটি ঘোষণার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন একাধিক মন্ত্রী।
তবে ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। বিশেষ করে ইউরোপে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণের পর বেশ কিছু দেশে নতুন করে লকডাউন দেয়ার পর ক্ষতির আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। আর সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আবার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার গণভবনে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ সভায় প্রধানমন্ত্রী করোনার দ্বিতীয় ঢেউকে সামনে রেখে আর্থিক প্রণোদনার একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে এ লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
দ্বিতীয় প্রণোদনা আসতে পারে, এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দূরদর্শী ও বিচক্ষণ একজন মানুষ। তিনি দেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং ব্যবসায়ী মহলের অভিভাবক হিসেবে দুর্যোগ মোকাবেলায় কখন কী করতে হবে তিনি ভালো জানেন।’
তিনি বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউ যখন শুরু হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রণোদনা চাইতে হয়নি। তিনি নিজেই বাস্তবতা অনুধাবন করে তার বিচক্ষণতা দিয়ে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এর সুফল দেশ ও দেশের অর্থনীতি পেয়েছে।
‘এখন আবার করোনার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি ওয়াকিবহাল। ব্যবসায়ীরা এবারও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রণোদনা চাননি। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছেন এখন কী করা উচিত। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনীতি সুরক্ষিত থাকবে।’
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আসছে
২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদী এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে এই সভা হয়।
‘সকলের সঙ্গে সমৃদ্ধি পথে’ স্লোগানে এই পরিকল্পনার চূড়ান্ত খসড়া উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম।
প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক পরিকল্পনাগুলো দেখেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
পরিকল্পনায় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা আলাদাভাবে হাইলাইট করতে পরিকল্পনা কমিশনকে নির্দেশ দেন সরকার প্রধান।
আগামী একনেক সভায় পরিকল্পনারটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হতে পারে।
সভায় প্রধানমন্ত্রী জানান, সেনা সমর্থিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সাব জেলে বন্দি থাকার সময় জেলে বসে উন্নয়নে একটি রোডম্যাপ তৈরির করেন। সেগুলো পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছে।
শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার তৈরির পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাজার সম্প্রসারণে কাজ করতেও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির, পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।