বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তুরস্ককে পাশে চান শেখ হাসিনা

  •    
  • ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:০৫

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলুর ঢাকা সফরে অন্যান্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে আলোচনা হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়েও। আঙ্কারা এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে আছে বলে জানিয়েছেন এরদোয়ানের মন্ত্রী।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে তুরস্কের সম্পৃক্ততা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার গণভবনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার।

তিনি বলেন, সাক্ষাতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে তুরস্ককে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা। এদেরকে ফিরিয়ে নিতে একাধিক চুক্তি করেও কথা রাখেনি মিয়ানমার। এ নিয়ে একাধিকবার বিরক্তি প্রকাশ করেছে ঢাকা।

এর মধ্যে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে প্রথমবারের মতো সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলুর শ্রদ্ধা

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানের পর রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। সে সময় মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার সীমান্ত খুলে দেয়।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ তুরস্ক রোহিঙ্গাদের জন্য নানা সাহায্য সহযোগিতা পাঠিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের স্ত্রী কক্সবাজার ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে গেছেন।

বাংলাদেশ সফরে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলু কথা বলেন রোহিঙ্গাদেরকে নিয়েও। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে যে ‘আত্মত্যাগ’ করেছে তা তুরস্ক গভীরভাবে উপলব্ধি করে।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার নানা স্মৃতিচিহ্ন ঘুরে দেখছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এক প্রশ্নে তুর্কি মন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে এরদোয়ান সরকার খুবই আন্তরিক। এ বিষয়ে তুরস্ক বাংলাদেশের পাশে আছে।

এই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক ও নির্মাণ খাতে সহযোগিতার আগ্রহের কথাও জানান তুর্কি মন্ত্রী। তার দেশ বাংলাদেশে অস্ত্র বিক্রি এবং যৌথ উদ্যোগে যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণে আগ্রহী বলেও জানান তিনি।

তুর্কি মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। নির্মাণ খাতে অংশগ্রহণ চায়। বাড়াতে চায় বাণিজ্য।

তুর্কি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বিশাল আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ বাজার থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, এখানে বিনিয়োগ করলে দুই দেশই লাভবান হবে।

তুর্কি মন্ত্রী বলেন, তুরস্ক বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মূল্য দেয়। বাণিজ্যিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু করার তার দেশ সেটা করবে।

জ্বালানি থেকে পর্যটন, সব খাতেই তুরস্ক বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে বলেও জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

লেবাননের বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’ মেরামত করে দেয়ায় তুরস্ককে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ অথবা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানকে জানানো আমন্ত্রণের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

এরদোয়ানের মন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে আগামী মার্চে তার প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করতে পারেন।

হাসান জাহিদ তুষার জানান, বাংলাদেশের অগ্রগতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তুর্কি মন্ত্রী। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ প্রশংসা করার মতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলু

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশে তুর্কি রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলু। বুধবার সকালে তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যায় ঢাকা ত্যাগ করেন।

২০১২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পর এরদোয়ানের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। তবে সম্প্রতি এরদোয়ান সরকারের নানা পদক্ষেপে দুই দেশ কাছাকাছি এসেছে। করোনা পরিস্থিতিতে তুরস্ক একাধিকবার বাংলাদেশকে চিকিৎসা সরঞ্জাম উপহার দিয়েছে।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথ সংবাদ সম্মেলন

সম্প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আঙ্কারা। বাংলাদেশে ফায়ার স্টেশন স্থাপন এবং অতি দরিদ্র মানুষকে ঘর করে দেয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে এরদোয়ান সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর