লোকসানের কারণে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হতে চাওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমেকো সিনথেটিকসের শেয়ার লেনদেন বন্ধের সময় আরও ১৫ দিন বাড়ল। এ নিয়ে ছয় দফা সময় বাড়াল কোম্পানিটি।
মঙ্গলবার ডিএসই ওয়েবসাইটে সময় বাড়ানোর খবরটি প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) তালিকাচ্যুতির আবেদন করে। পরের দিন তা ডিএসইর ওয়েবসাইটে জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, ২০১৩ সালের পর থেকে কোম্পানিটি লভ্যাংশ দিতে পারেনি। স্বল্প মূল্যে বিদেশ থেকে উৎপাদনের কাঁচামাল ডিটিওয়াই আমদানিতে ব্যর্থ হয়। দেশেও উৎপাদনের জন্য ইয়ার্ন সহজলভ্য ছিল না। ফলে সাত বছর বন্ধ থাকে কারখানা। এতে বিপুর লোকসানের মুখে পড়ে কোম্পানিটি। ফলে শেয়ারের দর নেমে আসে অভিহিত মূল্যের নিচে।
তালিকাচ্যুতির জন্য সব শ্রমিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানায় কোম্পানি। সেই সঙ্গে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা সব শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে কিনে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
এ জন্য ব্যাংকের বিশেষায়িত ‘এস্ক্র’ হিসাবে সমপরিমাণ টাকা কোম্পানির পক্ষ থেকে জমা করা হবে। এ হিসাবে অর্থ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া লেনদেন করা যায় না।
কোম্পানিটির বর্তমানে মোট শেয়ার রয়েছে আট কোটি ৬৭ লাখ ১২ হাজার ৩৫৯টি, যার মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাত রয়েছে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২৪ দশমিক ০৯ এবং বিদেশিদের বিনিয়োগ দশমিক ০২ শতাংশ শেয়ার।
কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার।
১৯৯৩ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং ১৯৯৫ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) তালিকাভুক্ত হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ড্র টেক্সচারাইজিং সুতা আমদানি করে ভালোই মুনাফা করছিল কোম্পানিটি। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নিয়মিত লভ্যাংশও দিয়েছে শেয়ারহোল্ডারদের।
কিন্তু কাঁচামাল আমদানি জটিলতায় এরপর থেকে আর লভ্যাংশ দিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি।
গত সাত বছরে সব ধরনের চেষ্টার পরও আর লাভজনক করা যায়নি ব্যবসা। ফলে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়।
শেষ পর্যন্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেয় দুই স্টক এক্সচেঞ্জে থেকে স্বেচ্ছায় তালিকাচ্যুতি হওয়ার।