বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিগারেটে কর নীতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে

  •    
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:২৯

ইন্টারন্যাশনাল সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ডে বাংলাদেশের স্কোর পাঁচের এর মধ্যে ২.৩৮, যা বৈশ্বিক গড় স্কোর ২.০৭ এর চেয়ে কিছুটা বেশি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ০.৮৭৫। 

বাংলাদেশসহ ১৭০টিরও বেশি দেশের সিগারেট কর নীতির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে প্রথমবারের মতো ‘ইন্টারন্যাশনাল সিগারেট ট্যাক্স স্কোর কার্ড’ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা টোব্যাকোনমিকস

এ গবেষণায় বাংলাদেশের প্রাপ্ত স্কোর ৫ এর মধ্যে ২.৩৮, যা বৈশ্বিক গড় স্কোর ২.০৭ এর চেয়ে কিছুটা বেশি।

অর্থাৎ সিগারেটে ধার্যকৃত কর কাঠামোয় বাংলাদেশ উন্নতি করেছে।

সিগারেট করনীতির স্কোর ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ছিল ০.৮৭৫।

ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়েস শিকাগো (ইউআইএস) এর হেলথ রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইনস্টিটিউটের অধীনে টোব্যাকোনমিকস মূলত অর্থনৈতিক গবেষণা করে থাকে।

টোব্যাকোনমিকস স্কোরকার্ড বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের তথ্য ব্যবহার করে দেশগুলোর সিগারেট কর নীতিমালা মূল্যায়ন করেছে।

এতে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক দেশ দুইয়ের নিচে স্কোর পেয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পর্যালোচনায় বলা যায়, ২০১৪ সালে থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে খুব কমই। বৈশ্বিক গড় স্কোর ১.৮৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.০৭। যেখানে বাংলাদেশের উন্নতি লক্ষণীয়।

তবে এই উন্নতি দৃশ্যমান হলেও সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে যেসব দেশ খুব ভালো স্কোর (৪.৬৩) করেছে, তাদের তুলনায় বাংলাদেশের উন্নতি এখনও অনেক পিছিয়ে।

সবচেয়ে বেশি স্কোর পাওয়া দুটি দেশ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। দেশ দুটিতে সিগারেটের উপর উচ্চ হারে সুনির্দিষ্ট একক এক্সাইজ কর চালু থাকায় এবং নিয়মিতভাবে তা বৃদ্ধি করায় সিগারেটের সহজলভ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

সে তুলনায় বাংলাদেশে সিগারেটের দাম ও করকাঠামোর দিক থেকে বাংলাদেশের তেমন কোনো অগ্রগতি নেই বললেই চলে।

উভয় ক্ষেত্রে মাত্র ১ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। বহুস্তরবিশিষ্ট অ্যাডভেলোরেম করকাঠামো এবং ভিত্তিমূল্য খুব কম থাকা এর অন্যতম প্রধান কারণ।

টোব্যাকোনমিকস-এর পরিচালক এবং এই স্কোরকার্ডের প্রধান রচয়িতা ফ্রাঙ্ক জে. চালুপকা বলেন, ‘এই স্কোরকার্ডের মাধ্যমে এটি পরিষ্কার যে, সিগারেটের কর বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, যা কোভিড-১৯ ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ব্যবহার করা সম্ভব।’

এ উদ্যোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এর ফলে অকালমৃত্যু রোধ হবে। যা একটি সুস্থ ও উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী গঠনে অবদান রাখতে সক্ষম।

জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সিগারেটের বিদ্যমান জটিল মূল্যস্তর প্রথা বাংলাদেশের স্কোর কম পাওয়ার অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতির উন্নতি করতে হলে বাংলাদেশে সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে বহুস্তর-বিশিষ্ট মূল্যস্তর প্রথা বিলুপ্ত করে সুনির্দিষ্ট করপদ্ধতি প্রবর্তন জরুরি। এছাড়া সর্বোপরি জীবন বাঁচাতে, ক্যানসারসহ তামাকজনিত রোগের প্রকোপ কমাতে ও প্রয়োজনীয় রাজস্ব আহরণের জন্য সমস্ত তামাকজাত পণ্যের উপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানোরও পরামর্শ রাখেন তিনি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাকাসক্ত ফুসফুস করোনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। তিনি দাবি করেন, তামাকজাত পণ্যের কর বৃদ্ধি করা হলে এর ব্যবহার কমবে এবং সরকারের বাড়তি রাজস্ব অর্জন সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে অকালে মৃত্যুবরণ করে থাকে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা ওই বছরের জিডিপির ১.৪ শতাংশের সমান।

এ বিভাগের আরো খবর