করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইউরোপ এবং আমেরিকায় শুরু হওয়ায় বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা আরও দীর্ঘায়িত হবে বলে মনে করে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স- বাংলাদেশ (আইসিসিবি)।
এর প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে তারা। এই সংকট মোকাবিলা ও উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের সুরক্ষায় আরও বেশি প্রণোদনা দিতে বলেছে আইসিসিবি।
সোমবার প্রকাশিত আইসিসিবির বার্ষিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ২৫ তম বার্ষিক কাউন্সিলে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ।
আইসিসি বলেছে, বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তীর্ণ হলে প্রধান রফতানিকারক দেশগুলোতে বাণিজ্য অগ্রাধিকারসহ অন্যান্য সুবিধা হারাবে। এ ক্ষতি পূরণে বাংলাদেশকে অবশ্যই প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ বা এফটিএ করতে হবে। তা না হলে বিশ্ববাণিজ্যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে আইসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ৯০ শতাংশই ক্ষুদ্র, অতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে এ খাতের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ এবং মোট কর্মসংস্থানের ৩০ শতাংশ সম্পৃক্ত।
তিনি বলেন, ব্যবসার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় চাপের মধ্যে পড়েছে এসব খাত। উপরন্তু, করোনায় প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছে। ফলে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে এ খাতে অবশ্যই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে কিছু চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন মাহবুবুর রহমান। এগুলো হলো : দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের অভাব, অবকাঠামো দুর্বলতা ইত্যাদি। এসব বিষয়েও গুরুত্ব দিতে বলেন আইসিসিবির সভাপতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক পারফরম্যান্সে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভাল করেছে, যা দারিদ্র্য এবং সামাজিক বৈষম্য কমাতে সহায়তা করেছে। মহামারি ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঠেকাতে বাংলাদেশ লড়াই করছে- উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
কাঙ্খিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এসএমই খাতের পাশাপাশি, রফতানি বাড়ানো, মুদ্রা সরবরাহ ঠিক রাখা, আটকে থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো ও সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখার কথা উল্লেখ করা হয় বার্ষিক প্রতিবেদনে।