করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত পোশাকশিল্পে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় নতুন করে আরও প্রণোদনা দেয়ার আভাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী।
শনিবার রফতানিমুখী পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় এমন ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়ায় আমরা শঙ্কিত। এ ধাক্কা সামলাতে হলে বাড়তি প্রণোদনা দিতে হবে।’
সরকার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনা করছে–এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কীভাবে নতুন করে বাড়তি সুবিধা দেয়া যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সামনে বিপদ দেখা যাচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের কিছু করতে হবে এবং সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।’
এর আগে বাড়তি প্রণোদনার দাবি জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিল পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
করোনা শুরুর পর প্রথম ধাপে পোশাক খাতে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা দেয়া হয়। এটি শেষ হতে না হতেই আবারও সুবিধা চান পোশাক মালিকেরা।
স্বাধীনতার ৫০তম এবং জাতির পিতার শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এসডিজিকে সামনে রেখে ‘গো হিউম্যান, গো গ্রিন’ নামে একটি উদ্যোগ নিয়েছে বিজিএমইএ ।
এ উদ্যোগের আওতায় সাতটি প্রতিশ্রুতির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। একই অনুষ্ঠানে নতুন একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন তিনি।
বিজিএমইএ-এর সভাপতি ড. রুবানা হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, বিজিএমইএ-এর সিনিয়র সহসভাপতি মো. ফয়সালসহ সংগঠনের অন্যান্য পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।
সাতটি প্রতিশ্রুতি হচ্ছে: শ্রমিকদের জন্য শিক্ষা, তাদের সন্তানদের প্রাকশৈশব শিক্ষা, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন, আর্থসামাজিক ও পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম, ফ্যাশন বিশ্বে রফতানি পণ্যে ঐতিহ্য উপস্থাপন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা এবং দক্ষতা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতার বিকাশ।
বিজিএমইএ বলেছে, এই প্রতিশ্রুতিগুলোর মূল লক্ষ্য হলো পোশাক শিল্পের প্রাণ শ্রমিক ভাইবোনদেরকে সহায়তা করা ও সেই সঙ্গে একটি আর্থসামাজিকভাবে উন্নত ও জীবন উপযোগী ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা।
বিজিএমইএ-এর সভাপতি ড. রুবানা হক প্রতিশ্রুতিগুলোর বিষয়ে বলেন, পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে শ্রমিক ভাইবোনদের জন্য উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
বর্তমানে মোট ৭০ জন নারী কর্মী সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ প্রোগ্রামের অধীনে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়ন করছেন।
এছাড়া কারখানার ডে কেয়ারে থাকা শ্রমিকদের শিশু সন্তানদের অনলাইন শিক্ষা প্রদানের জন্য বিজিএমইএ ও জাগো ফাউন্ডেশন যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান রুবানা হক।
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, ভালো থাকার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য নিবিড়ভাবে জড়িত। তাই বিজিএমইএ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ‘মনের বন্ধু’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এখন শ্রমিক ভাইবোনেরা এর মাধ্যমে আবেগ ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানসিকভাবে নিজেকে ভালো রেখে কিভাবে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়, সে বিষয়গুলোতে অনুপ্রেরণাময়ী পরামর্শ পাচ্ছেন।