করোনার কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আদায় না হওয়া ঋণের সুদ আয় হিসেবে দেখাতে পারবে ব্যাংকগুলো।
বৃহস্পতিবার এমন সুযোগ দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, যা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, ১০ কোটি টাকার বেশি ঋণের অনাদায়ী সুদ বা মুনাফা আয় হিসেবে দেখাতে হলে, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের পর্যালোচনা নীরিক্ষা কমিটির সুপারিশসহ পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদিত হতে হবে।
আর পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা ঋণের সুদ আয় হিসেবে দেখাতে শাখা প্রধানের সুপারিশসহ অনুমোদন লাগবে প্রধান নির্বাহীর।
পাঁচ কোটি টাকার নিচের ঋণের বেলায় শাখা প্রধানের সুপারিশসহ তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
তবে কোনো ঋণের সুদ আয় খাতে না নেয়া হলে, তা ‘ইন্টারেস্ট সাসপেন্স‘ হিসাবে স্থানান্তর করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতিতেও (প্রভিশন) আনা হয়েছে কিছুটা পরিবর্তন।
মহামারির কারণে বড় একটা সময় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। এখন তার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেনি অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান।
এসব প্রতিষ্ঠানকে কিছুটা স্বস্তি দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে কিস্তি না দিলেও কোনো ঋণই খেলাপি করা হয়নি।
ফলে সব ঋণ খাতাপত্রে অখেলাপি। তাই ভবিষ্যতের ঝুঁতি মোকাবিলায় বিশেষ উল্লেখিত হিসাবসহ সব ধরনের ঋণের বিপরীতে বাড়তি এক শতাংশ সাধারণ প্রভিশনিংয়ের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা ব্যাংকের হিসাব বইয়ে করোনাকালীন প্রভিশন হিসেবে আলাদাভাবে দেখাতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছাড়া এই প্রভিশনের অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার বা স্থানান্তর করা যাবে না।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, করোনাকালে যাদের যে কটি কিস্তি বকেয়া থাকবে, তারা তা দেয়ার জন্য নতুন করে সময় পাবেন।
কিন্তু এই সময় অনাদায়ী কিস্তির সুদের হিসাব ব্যাংকের আয় হিসেবে দেখানো যাবে কি না, সে বিষয়ে এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা ছিল না। ফলে ব্যাংকগুলোর আয় কী দাঁড়াবে বছর শেষে এসে প্রশ্ন দেখা দেয় তা নিয়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করবে। ঋণের কিস্তি না পেলেও সুদ তো হচ্ছে। এই সুদ ব্যাংকের আয়। তাই অনাদায়ী ঋণের সুদ আয় হিসেবে দেখাতে কোনো বাধা নেই।’