করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের ক্ষুদ্রশিল্পের সহায়তায় পাঁচ কোটি ডলার সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৪২৫ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এডিবির প্রধান কার্যালয়ে এ ঋণ অনুমোদন দেয়া হয়।
চলমান ‘মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় এ ঋণ দেয়া হচ্ছে বলে জানায় এডিবি।
গ্রামীণ এলাকায় নতুন কর্মসংস্থান তৈরির জন্য সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ক্ষুদ্র শিল্প নিয়ে কাজ করছে।
পিকেএসএফের মাধ্যেম এ ঋণ দেয়া হবে। এর মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৩০ হাজার ক্ষুদ্রশিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া হবে। এসব ক্ষুদ্রশিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ শতাংশের নেতৃত্বেই রয়েছেন নারীরা।
বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৫ শতাংশে অবদান রাখছে ক্ষুদ্রশিল্প। করোনা মহামারির কারণে এ খাতটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষুদ্রশিল্পের সঠিক পরিসংখ্যান নেই। কিন্তু দুই বছর আগে ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, সারা দেশে ছয় থেকে সাত লাখ ক্ষুদ্রশিল্প রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্রশিল্পগুলো নিয়ে মাঠ পর্যায়ে জরিপ করছে তারা।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজে ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। তবে এই তহবিল থেকে ঋণ বিতরণে ধীরগতির অভিযোগ করছে উদ্যোক্তারা।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এডিবির এ ঋণ সহায়তা বাংলাদেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
পিকেএসএফের চলমান প্রকল্পের আওতায় অংশীদারি ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩৯ হাজার ৫৮০টি ক্ষুদ্র উদ্যোগকে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় ৯১ হাজার ৪৩০ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানিয়েছে এডিবি।
এ বিষয়ে এডিবির বাংলাদেশ প্রিন্সিপাল কান্ট্রি বিশেষজ্ঞ জ্যোৎস্না ভার্মা বলেন, ‘বাস্তবায়নের আওতায় থাকা এ প্রকল্পে অতিরিক্ত অর্থায়ন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সচল ও কর্মসংস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করবে। বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তারা তাদের সংকটগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’