২০৫০ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানী আহরণ বন্ধ করার পরিকল্পনার পরিসর আরও বাড়ানোর অংশ হিসেবে উত্তর সাগরে নতুন করে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান না করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ডেনমার্ক।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স বৃহস্পতিবার নবায়ন না করার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটির সরকার।
এ ব্যাপারে ডেনমার্কের জলবায়ু মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন জীবাশ্ম জ্বালানি যুগের অবসান ঘটানোর চূড়ান্ত পর্যায়ের পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
দেশটির সরকারের এমন ঘোষণাকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার ক্ষেত্রে ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছে গ্রিনপিস ডেনমার্ক।
অক্টোবরেই ডেনমার্কে লাইসেন্স নবায়ন করার আবেদনের তালিকা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ফ্রান্সের টোটাল।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে এবারের রাউন্ডে আরও প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল। লাইসেন্স নবায়ন আবেদনের তালিকায় রয়েছে মাত্র আর একটি প্রতিষ্ঠান।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানি তেল উৎপাদনে ডেনমার্ক বর্তমানে সবচেয়ে বেশি তেল উৎপাদন করে থাকে। অবশ্য তাদের উৎপাদিত তেলের পরিমাণ ইইউ’র বাইরের ইউরোপীয় দেশ নরওয়ে ও যুক্তরাজ্য থেকে অনেক কম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান বিপির হিসাব মতে, ২০১৯ সালে ডেনমার্কের দৈনিক তেল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ব্যারেল। ডেনমার্কে ২০টি তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে ৫৫টি ড্রিলিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে।
দেশটির জলবায়ুমন্ত্রী ড্যান জোর্গেনসেন বলেন, ‘আমরা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। এই সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে একটা নাড়া দেবে।’
ডেনমার্কের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি ক্রোনার (১১০ ডলার) ক্ষতি হতে পারে।
গত শতকের ৭০ দশক থেকে উত্তর সাগর থেকে জ্বালানি আহরণ করে কোটি কোটি ডলার আয় করেছে ডেনমার্ক। দেশটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে এই খাতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এরপরও পরিবেশ রক্ষায় লাভজনক এই খাত থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে দেশটি।
জ্বালানি তেল অন্বেষণে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন না করার সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেছেন জোর্গেনসেন জানান, জলবায়ুগত দিক থেকে ডেনমার্ক ২০৫০ সালের মধ্যে নিরপেক্ষ অবস্থানে আসতে চায়। এই পরিকল্পনায় এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত।