করোনায় বিশ্বব্যাপী শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি হারিয়েছেন। চলতি বছর মজুরি কমেছে অপ্রত্যাশিত হারে। পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি না হওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে মজুরি হ্রাসের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে। অস্থায়ী ভর্তুকির ব্যবস্থা না থাকলে এ প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন বেতনভোগী ৫০ শতাংশ শ্রমিক তাদের মজুরির প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যন্ত হারাতে পারেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএলও এ সব তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উন্নত দেশগুলোর কোথাও কোথাও মজুরি বাড়লেও সে হার খুব সামান্য ও তা বেড়েছে খুব ধীর গতিতে। সেখানেও নিম্ন বেতনের শ্রমিকদের চাকরি হারানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
বেশি বেতনের শ্রমিকদের ডেটাবেইজের তথ্য ধরে বেতন বাড়ার হারটি বিবেচনা করা হয়েছে। ইউরোপীয় ২৮টি দেশের একটি নমুনা জরিপের ভিত্তিতে এই অনুমানটি করা হয়েছে। আবার যেসব দেশে কর্মসংস্থান রক্ষার জন্য জোরাল ব্যবস্থা নিয়েছে, সেখানে সংকটের প্রভাবগুলো মূলত মজুরিতে হ্রাসের পরিবর্তে ব্যাপক কর্মক্ষেত্রের ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
আইএলওর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, করোনার প্রভাবে সব শ্রমিক সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। নিম্ন বেতনে শ্রমিকরাই বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীদের উপর মজুরির হ্রাসের প্রভাব আরও বেশি। যেখানে পুরুষদের ৫.৪ শতাংশের তুলনায় নারীর মজুরি হ্রাসের হিস্যা ৮.১ শতাংশ।
প্রতিবেদন সম্পর্কে আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, করোনা সংকটে মজুরি হ্রাসের ফলে বৈষম্য বেড়েছে। এটি দারিদ্র্য এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার রক্ষায় সব দেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, করোনায় সৃষ্ট ক্ষতি পুনরুদ্ধারের কৌশলটি অবশ্যই মানবকেন্দ্রিক হতে হবে। আমাদের পর্যাপ্ত মজুরি নীতিমালা দরকার যা চাকরি ও উদ্যোগের স্থায়ীত্বকে বিবেচনায় রাখবে। চাহিদা পূরণের মতো মজুরি নিশ্চিত করতে হবে, যা শ্রমিকের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াবে ও বৈষম্য দূরীকরণে সহায়ক হবে।