বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করদাতা বাড়ছেই না

  •    
  • ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০৮:৩৯

সরকারের হিসাবে যোগ্য নাগরিকদের ৯৪ শতাংশই আয়কর দেয় না। কর দিতে অনীহা কেন, এ বিষয়ে কোনো গবেষণা নেই রাজস্ব বোর্ডের। ফলে করদাতা বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগও নেয়া যায়নি।

সরকারের হিসাবে দেশে কর দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে এমন লোকের সংখ্যা চার কোটি। অথচ নিয়মিত আয়কর দেন মাত্র ১৭ লাখ মানুষ। অর্থাৎ, সামর্থ্যবানদের প্রায় ৯৪ শতাংশই কর দেন না। বিপুলসংখ্যক মানুষকে আয়করের আওতায় আনতে এখনও তেমন কাঠামো গড়ে ওঠেনি।

দেশে মাথাপিছু আয় বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা। অর্থনীতির অনেক সূচকে পাশ্ববর্তী ভারতসহ অনেক দেশের চেয়ে এখন এগিয়ে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিও প্রশংসিত সারা বিশ্বে। এত অগ্রগতি থাকা সত্ত্বেও আয়কর আদায়ের চিত্র একেবারেই হতাশাজনক।

করের আওতা বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে নিয়মিত। এ জন্য উপজেলা পর্যন্ত করদাতা শনাক্ত ছাড়াও কর অফিস স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

চলতি বছরের মধ্যে এক কোটি লোককে নতুনভাবে করের আওতায় আনতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও নেই তেমন কোনো অগ্রগতি। ফলে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি করদাতা।

কেন মানুষ কর দিতে চায় না, সে বিষয়ে কোনো গবেষণা নেই এনবিআরের। ফলে কোথায় সমস্যা, সমাধানের উপায়ই বা কী, তা অনেকেটাই অস্পষ্ট সরকারের কাছে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক অথনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কর আদায় বাড়াতে হলে সবার আগে এনবিআরকে ঢেলে সাজানো দরকার। সেই সঙ্গে অটোমেশন করতে হবে কর বিভাগকে।’

তিনি বলেন, ‘বহু বছর ধরে সরকারকে এসব কথা বলা হলেও দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে রাজস্ব খাতে কার্যকর কোনো সংস্কার করতে পারেনি সরকার।’

এনবিআরের সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, ‘আওতা বাড়লেও সামর্থ্যবান করদাতার সংখ্যা বাড়েনি। করদাতাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হলে করদাতা ও কর্মকর্তার মধ্যে দূরত্ব আরও কমাতে হবে।’

অর্থনীতিবিদ ও রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জিডিপির বিচারে বছরে কর আদায় হওয়া উচিত কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকা। অথচ আয় হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আদায়যোগ্য করের অর্ধেকই ফাঁকি দেয়া হয়।

চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘জনসংখ্যা অনুপাতে করদাতার সংখ্যা এক শতাংশের নিচে। কর আদায়ের দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন অবস্থানে। এমনকি ছোট অর্থনীতির দেশ নেপালের চেয়েও পিছিয়ে।’

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনতে পারলে আয়কর তিন গুণ বাড়ানোর সুযোগ আছে। তাদের মতে, বাংলাদেশে বছরে যে পরিমাণ কর ফাঁকি হয়, তা দিয়ে তিনটি পদ্মা সেতু তৈরি সম্ভব।

দুই বছর আগে করা বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির হিসাবে বলা হয়েছে, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের করযোগ্য আয় আছে। সংস্থাটি বলেছে, যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনতে পারলে কর আদায় অনেক গুণ বাড়বে।

এনবিআর বছরে যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করে, তার মধ্যে আয়করের অংশ এখন ৩৫ শতাংশ। যোগ্য সবাইকে আওতায় আনতে পারলে তা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব বলে মনে করে সিপিডি।

নানা কারণে কর আদায় কম হয়। এ জন্য দায়ী নাগরিকদের কর দিতে অনীহার পাশাপাশি কর্মকর্তাদের হয়রানি ও দুর্নীতি, জটিল কর ব্যবস্থা ও পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন না হওয়া। এ ছাড়া জনগণের অসচেতনতাও একটা বড় কারণ।

এমন পরিবেশে ৩০ নভেম্বর পালিত হচ্ছে জাতীয় আয়কর দিবস। জনগণকে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করতে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো দেশে পালন করা হয় আয়কর দিবস। কিন্তু এ উদ্যোগও তেমন কাজে লাগেনি।

আয়কর দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর কর মেলা, শোভাযাত্রাসহ বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করে এনবিআর। করোনার কারণে তা বাদ দেয়া হয়েছে এবার। তবে আয়োজন করা হয়েছে একটি ওয়েবিনার। এতে অংশ নেবেন অর্থমন্ত্রী।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

আয়কর দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের অন্যতম প্রধান খাত হিসেবে আয়করের গুরুত্ব অপরিসীম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এনবিআর রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে সরকারের রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।’

জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে মুজিববর্ষে সবাইকে একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরো খবর