বহুজাতিক মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব- আইপিওতে আবেদনের পরিমাণ প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ- ডিএসই জানিয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ শেয়ারের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১৬শ কোটি টাকার।
ঘোষণা অনুযায়ী ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছেড়ে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা তোলার কথা রবির।
এর মধ্যে ১৩৬ কোটি টাকা তোলা হচ্ছে কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। বাকি ৩৮৭ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা তোলা হবে আইপিওর মাধ্যমে, যার মধ্যে ১৫৫ কোটি টাকা আসবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।
কিন্তু এর বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে এক হাজার ৫৮৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার। জমার হার এক হাজার ২৩ শতাংশের মতো।
বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে আইপিওতে আবেদনের জন্য যোগ্য প্রাথিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বা এলিজেবল ইনভেস্টর আছে প্রায় এক হাজার ২৫০টি; যার মধ্যে রবির আইপিওতে আবেদন করেছে ৬২১টি।
নিয়মানুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে কমপক্ষে এক কোটি টাকার ব্যালান্স বা স্থিতি থাকলেই আইপিওতে আবেদনের জন্য যোগ্য হয়। এলিবেজল ইনভেস্টররা রবির আইপিওতে সর্বোচ্চ ৩১ লাখ শেয়ারের জন্য আবেদন করতে পেরেছেন।
আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিজ ও যৌথ নামে দুটি আবেদন করতে পারেন। প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৫০০টি শেয়ার মিলবে। এজন্য গুণতে হচ্ছে ৫ হাজার টাকা।
সেই হিসাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ শেয়ারের আবেদন পড়তে হবে চার লাখ ৬৫ হাজার ২০৯টি। কিন্তু কার্যত পড়েছে কয়েকগুণ বেশি। সেই হিসাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অর্ধেকই রবির আইপিওতে আবেদন করেছেন।
বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স বা বিও হিসাব রয়েছে ২৫ লাখের বেশি, যার মধ্যে গত এক মাসেই যুক্ত হয়েছে প্রায় দেড় লাখ।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এদের বড় অংশই এসেছেন রবির আইপিও ঘিরে। ধারণা করা হচ্ছে, তালিকাভুক্তির পর পুঁজিবাজারে নতুন গতি আনবে কোম্পানিটি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের হিসাবের ভিত্তিতে সম্প্রতি কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা্ংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি।
ওই হিসাব অনুযায়ী রবির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস মাত্র চার পয়সা। আর প্রকৃত সম্পদমূল্য বা এনএভি ১২ টাকা ৬৪ পয়সা।
অবশ্য চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে রবি ১১৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। কোম্পানিটির কর্মকর্তারা জানান, ন্যূনতম ২ শতাংশ লেনদেন কর বা টার্নওভার ট্যাক্স না থাকলে মুনাফার চিত্র আরও ইতিবাচক হতো।
আলোচ্য সময়ে রবির মোট রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে তুলনায় ১ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ প্রান্তিকে রবির রাজস্ব ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।
রবি আজিয়াটার পরিশোধিত মূলধন ৫ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। তালিকাভুক্ত হলে এটিই হবে দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কোম্পানি।
গত ২৩ নভেম্বর রবির আইপিওর চাঁদা গ্রহণ বা সাবস্ক্রিপশন শেষ হয়।