মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ফাঁকি বন্ধে আধুনিক প্রযুক্তি ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি চালু করেছে সরকার।
যে সব ব্যবসায়ী এই মেশিন ব্যবহার করবে, তাদের লটারির মাধ্যমে পুরস্কার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনের একটি হোটেলে ইএফডি ও সেলস ডাটা কন্ট্রোলার ব্যবহারের উপকারিতা নিয়ে এক সেমিনারে এ কথা জানান তিনি।
এনবিআরের ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেট এই সেমিনারের আয়োজন করে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের নীতি হচ্ছে রাজস্ব আদায় বাড়লে কর হার কমানো হবে।’
এ বছেরর জুনে ভ্যাট আদায় বাড়াতে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, মিষ্টি দোকান, বড় বড় শপিংমলসহ সেবা খাতে আংশিক ইএফডি ব্যবস্থা চালু করে এনবিআর।
ইএফডি হচ্ছে এক ধরনের হিসাবযন্ত্র। এটি ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার- ইসিআরে উন্নত সংস্করণ।
ইএফডি চালুর ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন যে পরিমাণ লেনদেন হয়, তার তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানতে পারেন এনবিআর কর্মকর্তরা।
সরকারের আশা, এতে ভ্যাট ফাঁকি যেমন কমবে, তেমনি আদায়ও বাড়বে দ্বিগুণ। ইএফডি মেশিন ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা পরিকল্পনা করেছি, জানুয়ারি থেকে ইএফডি মেশিন থেকে যে ইনভয়েস পাব, সেগুলোর ওপর লটারি করবো।’
ইএফডি মেশিনের মাধ্যমে একটা করে ইনভয়েস জেনারেট হয়। এই ইনভয়েসের ইউনিক বা অভিন্ন নম্বর থাকে। প্রতি মাসে এ ইনভয়েসগুলোর ওপর লটারি হবে। এতে যারা বিজয়ী হবেন তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ ভ্যাট নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। বিক্রেতারা ভ্যাটকে বোঝা মনে করেন। আর ক্রেতারা ভাবেন তাদের দেয়া ভ্যাট সরকারের কাছে পৌঁছায় না। আমরা চাই জনগণের ভ্যাট না দেয়ার মানসিকতা দূর হোক ‘
অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে এনবিআরের সদস্য ড. আব্দুল মান্নান শিকদার বলেন, ‘অনেক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন ভোক্তারা ভ্যাট দিতে চায় না। কিন্তু আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় বলতে পারি ভোক্তারা ভ্যাট দিতে চান। আমাদের কাছে তারা বলেন, আমরা ভ্যাট দেই, কিন্তু চালানের কপি পায় না।’
ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য জাকিয়া সুলতানাসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।