বেশ কিছু দিন ধরেই পুঁজিবাজারের লেনদেনের নেতৃত্বে ওষুধ খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেড। বেড়েছে শেয়ারের দরও।
গত এক মাসে বেক্সিমকো ফার্মার দর ২৮ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৪৪ টাকা ৯ পয়সা। বাড়ার হার প্রায় পঁচিশ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক মহামারিতে অর্থনীতি যখন নাজুক অবস্থায়, তখনও মুনাফা বেড়েছে কোম্পানিটির। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল কোম্পানিটি।
তবে তা বহুগুণ বাড়িয়েছে, অক্সফোর্ডের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন সরবরাহে নাম আসার পর।
অক্সফোর্ডের করোনার টিকা পেতে সম্প্রতি ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট, বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।
ওই চুক্তি অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-সিওভি-টু এজেডডি ওয়ান টু টু টু (অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিন) সরবরাহ করবে। বেক্সিমকোর কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে তিন কোটি টিকা কিনবে সরকার। পরিবহনসহ প্রতি ডোজ টিকা দেশে আনতে খরচ হবে পাঁচ ডলার।
বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে করোনার আগাম টিকা অর্ডার করেছে সরকার।
খবরটি বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালসের উড়ন্ত পালে যুগিয়েছে বাড়তি হাওয়া।
কোম্পানিটির সবশেষ প্রকাশিত ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদন বলছে, গত জুলাই-সেপ্টম্বরে ১০৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে, যা ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এ সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি ছিল ৬৯২ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে যা ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থ বছরে নিরীক্ষিত আর্থিক হিসাবে ৩৫৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা মুনাফা দেখায় কোম্পানিটি। যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
কোম্পানিটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান,মহামারিতে তাদের ওষুধের চাহিদা বাড়ায়, আয় বেড়েছে।
বিশ্ববাজারের বাংলাদেশের ওষুধের চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে ২০০টির মতো দেশে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য বলছে, জুলাই থেকে সেপ্টম্বরে চার কোটি ২২ লাখ ডলারের ওষুধ রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশের মতো।
ওষুধ শিল্প উদ্যোক্তাদের তথ্য মতে, বর্তমানে ওষুধের স্থানীয় বাজার ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
শেয়ারের দরে বড় ধরনের উল্লম্ফন না হলেও, আয় বেড়েছে ওষুধ খাতের অন্যান্য কোম্পানিরও।
জুলাই সেপ্টেম্বরে স্কয়ার ফার্মাসিটিউক্যালস মুনাফা করেছে ৩৯৩ কোটি টাকার বেশি। প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির দৌড়ে রয়েছে রেনাটাও। কোম্পানিটি মুনাফা দেখিয়েছে ১২৩ কোটি ৯০ লাখ। মুনাফা বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি।