দেশের সবচেয়ে বড় মূলধনী কোম্পানি হিসেবে শেয়ারবাজারে যুক্ত হতে যাওয়া, মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার প্রাথমিক গণপ্রস্তাব-আইপিওর চাঁদা সংগ্রহ বা সাবস্ক্রিপশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার।
কোম্পানিটির শেয়ার পেতে, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা।
রবির আইপিওতে আবেদন করা যাবে ২৩ নভেম্বর বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
একজন বিনিয়োগকারী নিজ ও যৌথ নামে দুটির বেশি আবেদন করতে পারবেন না। প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ৫০০টি শেয়ার মিলবে। এজন্য গুনতে হবে ৫ হাজার টাকা। তবে আবেদন বেশি হলে, লটারি করা হবে। আর আবেদন কম হলে, চুক্তি অনুযায়ী অবলেখনকারী প্রতিষ্ঠান বা আন্ডাররাইটাররা তা কিনে নিতে বাধ্য হবেন।
মোট ৫২ কোটি ৩৭ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩৪টি শেয়ার ছাড়বে রবি। যার মাধ্যমে বাজার থেকে তুলবে প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৩৬ কোটি টাকা দেবেন, কোম্পানিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসব টাকা ব্যবহার করা হবে কোম্পানিটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছরের হিসাবের ভিত্তিতে সম্প্রতি কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা্ংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি। ওই হিসাব অনুযায়ী রবির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস মাত্র চার পয়সা। আর প্রকৃত সম্পদমূল্য বা এনএভি ১২ টাকা ৬৪ পয়সা।
রবি আজিয়াটার ইস্যু ব্যবস্থাপক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর পুঁজিবাজারে কোনো বহুজাতিক কোম্পানি আসছে। তাই বিনিয়োগকারীদের মাঝে আগ্রহের কোনো কমতি নেই। দেখেশুনে যা মনে হচ্ছে আবেদন কয়েকগুণ বেশি পড়বে।'
রবি আজিয়াটার পরিশোধিত মূলধন পাঁচ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০০৯ সালে গ্রামীণফোন শেয়ারবাজারে আসার ১১ বছর পর দ্বিতীয় মোবাইলফোন অপারেটর হিসেবে শেয়ারবাজারে আসছে কোম্পানিটি।
২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রবির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬–১৭ সালে পরপর দুই বছর কর পরবর্তী লোকসান গুণতে হয় কোম্পানিটিকে। বাকি তিন বছর লাভ করলেও, ২০১৯ সালে মুনাফায় বড় পতন ঘটে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে লাভ লোকসান নির্বিশেষে মুঠোফোন অপারেটরে মোট আয়ের ওপর ন্যূনতম ২ শতাংশ হারে কর আরোপ করায়, মুনাফার এ পতন বলে দাবি কোম্পানিটির।
এ কারণে ২০১৮ সালে ২১৫ কোটি টাকা মুনাফা করলেও, ২০১৯ সালে তা নেমে আসে মাত্র ১৭ কোটি টাকায়। তবে গত জানুয়ারি থেকে জুন, এই ছয় মাসে কোম্পাটির আয় বেড়ে প্রায় চারগুণের মতো হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা তিন হাজার ৭১০ কোটি।
বানকো সিকিউরিটিজকে নিষেধাজ্ঞা
রবির আইপিও আবেদন শুরুর আগেই অবৈধভাবে শেয়ার বিক্রি দায়ে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের-ডিএসই সদস্য বানকো সিকিউরিটিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউসটি নিজস্ব হিসাবে রবির শেয়ারের জন্য আবেদন করতে পারবে না।
রোববার এ সিদ্ধান্ত জানায় বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।