চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ১২ দশিমক ৭৯ শতাংশ। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়ন হয়েছিল ১৪ দশিমক ২৫ শতাংশ।
বুধবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন (আইএমইডি) বিভাগের প্রকাশিত অগ্রগতি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তরা বলেছেন, করোনার মধ্যে এ সময়ে উন্নয়ন কাজের যে অগ্রগতি হয়েছে, তা খুব একটা খারাপ বলা যায় না।
শুষ্ক মওসুমে দেশে কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। এছাড়া মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও দফতরগুলো কাজের পরিকল্পনা তৈরি শেষ করেছে। কার্যাদেশ প্রায় চূড়ান্ত। আশা করা যাচ্ছে, সামনের মাসগুলোতে কাজের গতি আরও বাড়বে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন হয় ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছের ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৩ দশিমক ৬০ শতাংশ।
করোনার প্রভাবে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গত জুনে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে এডিপি ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট খরচ হয় ২৭ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। শতকরা হারে যা এডিপিতে মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ হয় ১৮ হাজার ৩২৪ কোটি টাক। বাকি ৮ হাজার ২৮৪ কোটি বিদেশি ঋণ।
সার্বিকভাবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় উন্নয়ন কাজের গতি কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও মাসভিত্তিক অগ্রগতি সন্তোষজনক।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৪ দশিমক ৭৩ শতাংশ।
সেপ্টেম্বর মাসে এ হার ছিল ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ গত মাসের তুলনায় চলতি মাসে কিছুটা বেড়েছে। এর আগের দুই মাসে আগস্ট এবং জুলাইয়ে ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৩৮ এবং ১ দশমিক ৫২ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।
করোনায় স্বাস্থ্য সেবা, সামাজিক সুরক্ষাসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে সরকার। এর অংশ হিসেবে বাজেট ঘোষণার পরপরই কম গুরুত্বপর্ণূ প্রায় তিন শতাধিক প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে অর্থ বিভাগ। এতে সাশ্রয় হয় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ করোনা প্রতিরোধে সরঞ্জাম আমদানিসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় খাতে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
গত মার্চে দেশে করোনা রোগী প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর সরকার লকডাউন ঘোষণা করলে উন্নয়ন কাজ থমকে যায়। এর প্রভাবে গত অর্থবছর এডিপি বাস্তবায়ন সর্বনিম্ম পর্যায়ে নেমে আসে।
বাংলাদেশ এডিপি বাস্তবায়নের হার গড়ে ৯৫ শতাংশ হলেও করোনার প্রাদুর্ভাবে গত অর্থবছরে তা নেমে আসে ৮০ শতাংশে। যদিও সরকারি হিসাবের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, এটি ৬০ শতাংশের বেশি হবে না।