ভোক্তার কাছ থেকে আদায় করেও ৮০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগে বেকারিপণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মি. বেকারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা, নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদফতর।
ভ্যাট গোয়েন্দা, নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান নিউজবাংলাকে জানান, ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২০ অক্টোবর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল মি. বেকারের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে। পরে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীতে মি. বেকারের ২৯টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করে থাকে মি.বেকার। অভিযানে প্রতিষ্ঠানটি কোনো ধরনের হিসাব সংরক্ষণ না করেই ব্যবসা করছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
একই সঙ্গে ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা টঙ্গী এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির নামে দুটি ব্যাংক হিসাব তলব করেছে।
মি. বেকারের কারখানায় অভিযান চালাচ্ছেন ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক হিসাবের তথ্য ও প্রয়োজনীয় নথি পরীক্ষা করে তদন্ত কর্মকর্তরা দেখতে পান, গত দুই বছরে মি. বেকার যে পরিমাণ বিক্রি করেছে, জমা দেয়া ভ্যাট রিটার্নে তা দেখানো হয়নি।
বিক্রির তথ্য গোপন করে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট আইন অনুযায়ী যা দণ্ডনীয় অপরাধ। এরপর প্রতিষ্ঠানটির নামে মামলা করা হয়েছে বলে জানান ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
অভিযানটি নেতৃত্ব দেন ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার এবং জনাব ফেরদৌসী মাহবুব।
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ বিক্রি করে তা প্রতি মাসেই ভ্যাট রিটার্নে দেখাতে হয় ও ভ্যাট অফিসে রিটার্ন জমা দিতে হয়। সেই হিসাবেই ভ্যাট সংগ্রহ করে এনবিআর।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের ডিজি মইনুল বলেন, আইন মোতাবেক যে কোনো প্রতিষ্ঠানের হিসাব সংরক্ষণে কেনা ও বিক্রির পুস্তক রাখা বাধ্যতামূলক। অভিযানে এসব কাজগপত্র দেখাতে পারেনি মি. বেকারের কর্মকর্তারা।
মি. বেকারের কার্যালয়ে অভিযানের সময় ভ্যাট সংক্রান্ত অন্যান্য দলিলা দেখাতে বলা হলেও দেখাতে পারেননি কেউ। এগুলো সংরক্ষণ না করার বিষয়ে তারা কোনো সদুত্তরও দিতে পারেননি।
মালিকপক্ষ বাণিজ্যিক দলিল রাখে না, এতে ভ্যাট গোয়েন্দা দলের কাছে এটা পরিষ্কার হয়েছে মনগড়া ও কাল্পনিক হিসাবের ভিত্তিতে ‘মি. বেকার’ স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে রিটার্ন দাখিল করে আসছে, যা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানান ড.মইনুল।
এছাড়া মি. বেকারের আরেকটি সুইটমিটের ব্যবসা রয়েছে। রাজধানীতে সেটিরও পাঁচটি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের তথ্যও অনুসন্ধান চলছে।