করোনায় দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকনির্ভর ব্যবসা বেড়েছে। মোট ফেসবুক ব্যবহারকারীর এক শতাংশ এফ-কমার্স উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা করছেন।
বাংলাদেশ অ্যাসেসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির জানিয়েছেন, দেশে এসব উদ্যোক্তার ফেসবুক ভিত্তিক বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ এখন ৩১২ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি- ডিসিসিআই আয়োজিত ‘করোনাকালে ই-কমার্স এবং ভোক্তা অধিকার: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এফ-কমার্স খাতের এই চিত্র তুলে ধরেন তিনি। জানান, দেশে এখন তিন কোটি ৬০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে।
যদিও এফ-কমার্স উদ্যোক্তাদের অধিকাংশরই ট্রেড লাইসেন্স নেই। এরা বেসিস বা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়শন বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সদস্যও নয়। ফলে এসব উদ্যোক্তা এফ-কমার্সের আওতায় কোথায় কার সঙ্গে কী ধরনের লেনদেন করছেন সেটি সরকারের নজরদারিতে নেই।
এগুলো খাতটির লেনদেন প্রক্রিয়াটিয় প্রতারণা ও অনিশ্চয়তার ঝুঁকিও তৈরি করে।
করোনা পরিস্থিতি দেশে এফ-কমার্স ব্যবসার আরও প্রসার ঘটিয়েছে। সামাজিক দূরত্বের কারণে প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অনেকেই অনলাইনে কেনাকাটায় ঝুঁকেছেন।
এতে ই-কমার্সের পাশাপাশি এফ-কমার্সের পরিধিও বেড়েছে। এফ-কমার্সে নিত্যপণ্যের পাশাপাশি পোশাক, খাবার, ওষুধ, ইলেকট্রনিক্সসহ সব ধরনের পণ্যই বিক্রি হচ্ছে।
বেসিস বলছে, দেশে ই-কমার্সের জনপ্রিয়তার ওপর ভর করে এফ-কমার্সের প্রসার ঘটেছে। দুই প্রক্রিয়াই মূলত ই-কমার্স। ই-কমার্স হলো ফরমাল ট্রেড; এফ কমার্স এখনও ইনফরমাল পর্যায়ের ট্রেড।
ডিসিসিআইর সমীক্ষা বলছে, বর্তমানে দেশে ই-কমার্স খাতের আকার প্রায় ২০০ কোটি ডলার বা ১৭ হাজার কোটি টাকা। প্রতি বছর খাতটি ৫০ শতাংশ হারে বাড়ছে।
বেসিস বলছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে ই-কমার্স বাজার বেড়েছে ১৬৬ শতাংশ। আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে এ খাতের ব্যবসার আকার দাঁড়াবে ৩০০ কোটি ডলার বা সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা।
বেসরকারি এই দুটি প্রতিষ্ঠানের হিসাব বলছে, ই-কমার্সের তুলনায় এফ-কমার্সের প্রসার কম হলেও দিনদিন বাড়ছে। ব্যক্তিখাতের স্বাধীন উদ্যোক্তা তৈরিতে এর সম্ভাবনাও অনেক।
বেসিস সভাপতি আলমাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এ ধরনের এফ-কমার্স উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করছি না। তবে এফ-কমার্স উদ্যোক্তা যারা রয়েছেন, তাদের সবাইকে একটি নিবন্ধন কার্যক্রমের আওতায় আনতে হবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রসার ঘটানো গেলে সম্ভাবনা অনেক।’
তিনি বলেন, ‘এটি করা গেলে তাদের কার্যক্রম যেমন পর্যবেক্ষেণের আওতায় আনা সম্ভব হবে, প্রতারণাও দূর হবে। পাশাপাশি তাদের আর্থিক ঋণ সুবিধা পাওয়ার বিষয়টিও সহজ হবে।’
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের- ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশে ফেসবুক ভিত্তিক ই-কমার্সের বিস্তৃতি অনেক বেশি। এসব উদ্যোক্তার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে স্বল্পমূল্যে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা উচিত।’