করোনা মহামারির মধ্যে দেশের রফতানিখাতে তেজিভাব থাকার পর হঠাৎ ছন্দপতন হয়েছে। চলতি অর্থবছেরর প্রথম তিন মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রফতানি আয় ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে অক্টোবরে আয় কমার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যর্থ হয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সবশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরের অক্টোবরে রফতানি আয় হয়েছে ২৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার। অর্থাৎ অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ৬ শতাংশ।
পোশাক রফতানিকারকেরা বলেছেন, ইউরোপ ও আমেরিকায় করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার জার্মানি ও ফ্রান্সে লকডাউন চলছে। একক দেশ হিসেবে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার যুক্তরাষ্ট্রেও বাড়েছে করোনা সংক্রমণ। এসব কারণে রফতানি ফের হোঁচট খেয়েছে।
তবে একক মাস হিসেবে অক্টোবরে আয় কমলেও চলতি অর্থবছরের চার মাসে, অর্থাৎ জুলাই –অক্টোবর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বেড়েছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে রফতানির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১ হাজার ২৭৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ২৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
প্রথম চার মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে দশমিক ৩৮ শতাংশ।গত অর্থবছরের অক্টোবর সময়ে রফতানি হয়েছিল ১ হাজার ২৭২ কোটি ডলার। ফলে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ১ শতাংশের কাছাকাছি।
দেশের রফতানির আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার কারণে গত মার্চে এ খাতে রফতানি কমতে শুরু করে; এপ্রিলে পোশাক রফতানিতে ভয়াবহ ধস নামে।
মে মাসেরও তা অব্যাহত ছিল। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ায় পোশাক খাত। জুলাই, আগস্টের মতো সেপ্টেম্বরেও এ প্রবণতা অব্যাহত ছিল। তবে অক্টোবরে শেষে ফের হোঁচট খেয়েছে খাতটি।
ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলোদেশ আয় করেছে এক হাজার ৪৫ কোটি ডলার। যা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৮৯ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতের আয় ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।
তবে মহামারিরর মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর চার মাসে ৪৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া, প্লাস্টিক, চামড়াসহ অন্যান্য প্রধান রফতানিযোগ্য পণ্যের আয় এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে।