ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রোববার ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, ভ্রাতৃসুলভ। আমার মনে হয় না এখানে কোনো সমস্যা আছে (আই ডোন্ট থিংক, দেয়ার ইজ এনি প্রবলেম।’
বাংলাদেশে দায়িত্ব নেয়ার পর অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এটাই ছিল ভারতীয় হাই কমিশনারের প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়। এ সময় তারা বাণিজ্য-বিনিয়োগ, শিক্ষা-সংস্কৃতি, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
পরে অর্থমন্ত্রী ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনা করেছি। ভারত-বাংলাদেশ অতীত ইতিহাস, বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং তাদের সাহায্য সহযোগিতা সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ এ আলোচনায় আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, আমাদের মধ্যে তেমন কোনো সমস্যা নেই।’
এ সময় ভারতীয় উপমহাদেশের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতির কথা স্মরণ করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘১৬০১ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যখন ভারতীয় উপমহাদেশে, তখন বিশ্বে এক নম্বর অর্থনীতির দেশ ছিল ভারত। সেই অর্থনীতির ৩৫ শতাংশ ছিল ভারতীয় উপমহাদেশের। সেখানে ইংল্যান্ডের মতো দেশের অর্থনীতি ছিল ১০ শতাংশের নিচে। পরে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন ঘটলেও বিশ্ব অর্থনীতিতে এখনও ভারতীয় উপমহাদেশের শক্তিশালী অবস্থান অটুট রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন ‘আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি এ অঞ্চলের সব দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ-ভারত এক সঙ্গে কাজ করলে দুই দেশই প্রবৃদ্ধির শীর্ষস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। দরকার শুধু পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা।’
তিনি জানান, এই সহযোগিতার মানে হচ্ছে দুই দেশের প্রবৃদ্ধি তরান্বিতকরণ সংক্রান্ত সহায়ক পদক্ষেপ নেয়া।
যৌথ ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, ‘সম্ভাবনার চেয়ে সমস্যা বড় হতে পারে না। ভবিষ্যতে দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করলে সমস্যাগুলোই একটা সময়ে সম্ভাবনায় রূপান্তর হবে।’
বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং অর্থের বিশ্বময় গতিপ্রবাহ খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি আবির্ভূত হচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধির উচ্চাকাঙ্খা রয়েছে। সেটা ভারতেরও রয়েছে। প্রবৃদ্ধির এই উচ্চতাকে অর্জন কঠিন কিছু হবে না, যদি দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করে যায়।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধকতা ও নিরুৎসাহিত হওয়ার মতো সব কারণগুলো ইতিমধ্যে চিহ্নিত। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যকার সব ধরনের সম্ভাবনার কথাও আমাদের জানা। সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে সব ধরনের সুযোগকে যথার্থভাবে কাজে লাগাতে আগ্রহী দুই দেশই। তাই সেখানে সমস্যা কোনো বড় বিষয় নয়।’
হাই কমিশনার দোরাইস্বামী বলেন, ‘আমরা ব্যবসাবান্ধব ও যোগাযোগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে পারলে তার সুফল পাবে দুই দেশের অর্থনীতি। সেখানে পিছিয়ে থাকার সুযোগ কারও নেই। এ সম্পর্কোন্নয়নের অবারিত সুযোগ আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে।’