বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কীভাবে চিনবেন ভালো চকলেট

  •    
  • ৩০ অক্টোবর, ২০২০ ২১:১২

বাজারে ভালো ব্র্যান্ডের চকলেটের পাশে কাছাকাছি নামের দেশি চকলেট অনেককে বিভ্রান্তিতে ফেলে। মোড়ক আর দাম দেখেই চিনে ফেলা সম্ভব কোনটা আসল ব্র্যান্ড, কোনটা নকল।

কোমলমতি বাচ্চাদের চকলেট খুবই প্রিয়। তবে ‘কিন্ডার জয়’ চকলেটের প্রতি তাদের আকর্ষণ একেবারেই আলাদা। দোকানে চোখে পড়ামাত্র শিশুর আবদার। কিনে না দিয়ে উপায় কী!

কিন্তু কিনতে গেলে যত গন্ডগোল। কারণ বাজারে এখন হুবহু কিন্ডার জয়ের মতো অবিকল মোড়ক ও অবয়বে বেরিয়েছে ‘কিং জয় এগ’ এবং ‘কিংস জয়’  চকলেট। ভালো করে না দেখলে ভুল করা স্বাভাবিক।  

পুরান ঢাকার বেগমবাজারে চকলেটের পাইকারি বিক্রেতা মাহিদুল জানান, “এ বিভ্রান্তি দূর করার প্রথম উপায় হচ্ছে দাম। দাম শুনেই বুঝবেন কোনটা আসল। কারণ ‘কিন্ডার জয়’ চকলেট দেশে উৎপাদন হয় না। ভারত থেকে আমদানি করা হয়। লেভেলের গায়ের রেটই থাকে ইন্ডিয়ান ২৫ রুপি।”

মাহিদুল বলেন, দেশে আসার পর লেভেলের গায়ে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সিল লাগানো হয় এবং দাম পুনঃনির্ধারিত হয়। এরপর তা পাইকার হয়ে খুচরা পর্যায়ে হাতবদল হয়। ফলে আসল ‘কিন্ডার জয়’-এর দাম দেশি নকলগুলোর  চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি।’

এই আমদানিকারকের দাবি, “খুচরা পর্যায়ে কিন্ডার জয়ের দাম ৭৫ টাকার বেশি হতে পারে। ‘কিং জয় এগ” এবং ‘কিংস জয়’-এর খুচরা দাম স্থানভেদে মাত্র ২৫-৩০ টাকা।”

একই এলাকার পাইকারি বিক্রেতা মো. হাবিবুর রহমান জানান ‘কিন্ডার জয় দেখলেই বোঝা যায় এটা বাইরের আইটেম। চকলেটের লেভেলে কোড নাম্বার, ব্যাচ নাম্বার দেয়া থাকে। দেশি পণ্যে এ ধরনের কোড দেয়া থাকে না।’

দেশিটা কোথায় কারা তৈরি করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আমাদের জানা নেই। এখানে কোম্পানি মাঝে মাঝে আসে। পণ্য দিয়া যায় আমরাও রাখি। কাস্টমার ঠিক রাখতেই আমাদের এটা রাখতে হয়।‘

কিটক্যাট ও ডেইরি মিল্ক

চকলেটের আরও দুইটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হচ্ছে কিটক্যাট ও ডেইরি মিল্ক। এগুলোও ভারত থেকে আমদানি করা। আমদারিকারকদের বরাত দিয়ে পাইকারি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দেশে কিটক্যাটের ডুপ্লিকেট এখনও হয়নি। তবে ডেইরি মিল্ক নামে দেশে আরও কিছু বিশেষণ লাগিয়ে একাধিক চকলেটের অস্তিত্ব আছে বাজারে। কেনার সময় এখানেও রয়েছে চেনার সমস্যা। চকলেটটি দেশি না বিদেশি তা চেনার উপায় পণ্যের লেভেলটি ভালভাবে দেখে কেনা। তাহলে আর চকলেট কিনে ঠকবেন না।

বাজারে পাওয়া যায় হরেক ব্র্যান্ডের চকলেট।

 

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের নাম গোপন রাখার শর্তে পাইকারি বিক্রেতা মো. ওসমান বলেন, ‘কেনার সময় আপনি চকলেট হাতে নিন। লেভেল ভালভাবে ঘুরিয়ে দেখুন। এরপর ভাজের অংশটি উল্টান। দেখবেন সেখানে উৎপাদনের তারিখ লেখা আছে। ব্যাচ নাম্বার রয়েছে। এমনকি উৎপাদনের দিনটিতে কতটা সময় এর উৎপাদন হয়েছে তাও লেখা থাকবে। কিন্তু মেয়াদ ফুরানোর কথা সরাসরি বলা থাকবে না। তবে সেখানে উল্লেখ থাকবে “বেস্ট বিফোর নাইন মানথ ফ্রম প্যাকেজিং”, অর্থাৎ উৎপাদনের দিন থেকে পরবর্তী নয় মাসের মধ্যে খাওয়া সবচেয়ে উত্তম।’

মৌলভীবাজারের পাইকারি চকলেট বিক্রেতা ঢাকা ট্রেডার্সের মালিক মর্তূজা জানান, দেশে কিন্ডারজয়-কিটক্যাট চকলেট আমদানি করে নেসলে বাংলাদেশ। এছাড়া পোলার কোম্পানি এবং আইডিসিও চকলেটের বাজারে বড় আমদানিকারক। তবে করোনায় এখন বিদেশি চকলেট আমদানির পরিমাণ কমে গেছে। মার্চের পর দেশে এর বিক্রি ২০ শতাংশে নেমে গেছে।’

চকলেটের পাইকারি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান মৌলভীবাজারের বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক পারভেজ আলী দাবি করেন ‘কিন্ডারজয় ও কিটক্যাট লোকালি তৈরির সুযোগ নেই। কারণ এ ধরনের চকলেটের অবয়ব, ফ্লেভার এবং স্বাদ দেশের কোনো কোম্পানি এখনও আনতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘ভালমানের ব্র্যান্ডের বেশিরভাগ চকলেট আসে ভারত থেকে। এছাড়া চায়না, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও অনেক চকলেট আসে।’

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ‘কিন্ডার জয়’-এর আমদানি মূল্য ৫৭.৫০ টাকা। এর পাইকারি দাম ৬২-৬৫ টাকা। আর খুচরা বিক্রি হয় ৭৫ টাকায়। স্থানভেদে আরও বেশিতে বিক্রি হয়। অন্যদিকে ২৪ পিস বক্সের দেশি ‘কিং জয় এগ’- এর পাইকারি দাম ৩৩০ টাকা। প্রতিটির দাম পড়ে প্রায় ১৪ টাকা। খুচরা বিক্রি হয় ২৫ থেকে ৩০ টাকা।

কিটক্যাটের উৎপাদক প্রতিষ্ঠান প্যাকেটের গায়ে দাম রেখেছে ২৫ রুপি। বাংলাদেশে এর আমদানি মূল্য ৫০ টাকা। এক বাক্সে ১৮ পিস চকলেট থাকে। 

২০১৫-১৬ অর্থবছরে সরকার চকলেটের আমদানি শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করার পর দেশে বৈধপথে চকলেট আমদানি বেড়ে যায়। ওই বছরই (২০১৬ সালে) বৈধপথে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার চকলেট আমদানি হয় দেশে। এরপর চকলেটের বাজার আরও বড় হয়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এখন চকলেটের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর