করোনাকালে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ আরও স্ফীত হয়েছে। সবশেষ আকার দাঁড়িয়েছে চার হাজার ১০০ কোটি (৪১ বিলিয়ন) ডলার। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।
গত বুধবার রিজার্ভ দাঁড়ায় ৪ হাজার ১০৩ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ কিছুটা কমলেও চার হাজার ১০০ কোটি ডলারে নেমে আসে।
এই রিজার্ভ দিয়ে ১০ মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। মূলত রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভ এই অবস্থানে পৌঁছেছে।
এ ছাড়া বিদেশি ঋণ সহায়তা ও রফতানি আয়ের ইতিবাচক ধারা রিজার্ভ বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে বলেও জানিয়েছেন বংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
- আরও পড়ুন: তিন মাসে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ আড়াই গুণ
মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভে ১০০ কোটি ডলার যোগ হয়ে নতুন এই উচ্চতায় পৌঁছেছে।
গত ৮ অক্টোবর রিজার্ভ চার হাজার ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল। এ নিয়ে মাত্র সাড়ে ৫ মাসের ব্যবধানে আট বার নতুন মাইলফলক অতিক্রম করল রিজার্ভ।
গত অর্থবছরের শুরু থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে দুই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রণোদনা দেওয়ার ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকে প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স বাড়তে থাকে।
গত অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে রেমিট্যান্সের গতি কিছুটা নিম্নমুখী হলেও রোজার ঈদের মাস মে থেকে আবার ঊর্ধ্বগতি ধারায় ফেরে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি অক্টোবর মাসেও বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স পাছিয়েছেন প্রবাসীরা। এর পরিমাণ প্রায় ১৮০ কোটি থেকে ২০০ কোটি ডলার। তবে পুরো মাসের প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাবে ২ নভেম্বর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৬৭১ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২১৯ কোটি ডলার বা ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ৯৮৯ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।
এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ে চেয়ে দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসেই রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর গত মার্চ শেষে রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ২৩৯ কোটি ডলার। সেখান থেকে সাত মাস পার না হতেই প্রায় ৮০০ কোটি ডলার বেড়ে রিজার্ভ এ পর্যায়ে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, সামনে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধের তারিখ রয়েছে। এই দেনা পরিশোধ করা হলে রিজার্ভ কিছুটা কমে যেতে পারে।