বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত করা হয়েছে আরও ৪৩ পণ্য।
রোববার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে বিএসটিআইয়ের ৩৪তম কাউন্সিল সভায় তালিকাভুক্তির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ছিল ১৯৪টি। নতুন তালিকাভুক্তির পর সংখ্যা দাঁড়াল ২৩৭টি।
সভায় বলা হয়, গত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে সংস্থার মান সনদভুক্ত পণ্যের পরিধি বাড়লেও তা সক্ষমতা থেকে অনেক দূরে।
কাউন্সিল সভায় বলা হয়, মান সনদ দেয়ার দাবি রাখে ভোক্তাপর্যায়ে ব্যবহৃত এমন চার হাজার পণ্য তালিকা রয়েছে বিএসটিআইয়ের হাতে। উৎপাদন ও বিপণন পর্যায়ে গুণগত মান নিশ্চিত না হওয়াসহ সংস্থাটির দুর্বলতার কারণে সেগুলো তালিকাভুক্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না।
ভোক্তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় নতুন নতুন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যকে বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতায় আনা এবং আওতাবহির্ভূত পণ্যের অবাধ বিপণন বন্ধে সংস্থটিকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী।
মান সনদের নতুন তালিকার মধ্যে আছে- লো ফ্যাট মিল্ক, ফ্লেভারড মিল্ক, আইস ললি, ন্যাচারাল মেহিদী, ডিসওয়াশিং লিকুইড, লিকুইড টয়লেট ক্লিনার, নেইল পলিস, গোল্ড (স্বর্ণ), পাওয়ার লুমে তৈরি কটন শাড়ি, প্যাসেঞ্জার কার টায়ার ও রিম, হলো ক্লে ব্রিক্স ও ব্লকস ও পাওয়ার ট্রান্সফরমার।
সভায় গুণগত শিল্পায়নের চলমান ধারা জোরদারে জেলা পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের মান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ ল্যাবরেটরি সুবিধার প্রসার, প্রাতিষ্ঠানিক জনবল বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ সুবিধা জোরদার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, যাতায়াত ও প্রণোদনার সুযোগ বাড়ানো এবং হালাল খাদ্যের রফতানি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সভায় জেলা পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের অফিস সম্প্রসারণে বিভাগীয় অফিসের পাশাপাশি আরও ১৩টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের মাধ্যমে ৬৪টি জেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ৪৩টি জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত, ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও সার্ভিল্যান্স পরিচালনার সীমিত জনবলে অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘ভোক্তাপর্যায়ে ব্যবহৃত পণ্য গুণগত মানসম্পন্ন করতে সবার আগে বিএসটিআইকে শক্তিশালী হওয়া দরকার। কারণ এ প্রতিষ্ঠানের গুণগত মানের সঙ্গে জনগণের জীবনের সুরক্ষাও জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘বিএসটিআই সক্ষম হলে তৃণমূল পর্যায়ে গুণগত শিল্পায়নের ধারা জোরদার হবে। পণ্যমানও ভালো হবে। তাতে দেশীয় পণ্যের বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা বাড়বে। এতে রফতানিও বাড়বে। সরকার সে লক্ষ্যেই বিএসটিআইয়ের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে।
‘মান সনদের আওতায় পণ্যসংখা বাড়লে ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। কারণ পণ্যের মান সম্পর্কে নিশ্চয়তা দেবে বিএসটিআই।’
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু মান সনদে পণ্য সংখ্যা বাড়ালেই হবে না। নিয়মিত তদারকিও করতে হবে। সঙ্গে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও বিএসটিআইকে সোচ্চার হতে হবে। তবেই ভোক্তারা সুরক্ষিত থাকবে।’