গত কয়েক বছর ধরে দেশের পোশাকের ব্র্যান্ড শপগুলো দুর্গাপূজাকেন্দ্রিক সংগ্রহ রাখলেও এবার কিছুটা কম। করোনাভাইরাসের কারণে বিক্রি কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে দোকানগুলো। তবে পূজা যত ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতা বাড়ছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দুই ঈদে আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় দেশের বড় বড় পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো ব্যবসায় পিছিয়ে পড়ে। ওই ধকল কাটিয়ে উঠে পূজায় ভালো সংগ্রহ রাখা সম্ভব হয়নি অধিকাংশ শোরুমে।
রাজধানীর বড় বড় বিপণীবিতান ঘুরে, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, করোনার কারণে একদিকে যেমন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতার ঘাটতি ছিল, অন্যদিকে ক্রেতাদের চাহিদা ও সামর্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখেও যোগান কিছুটা কমিয়ে দেয় নামীদামি ব্র্যান্ডগুলো।
এ কারণে ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোর তুলনায় নন-ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে পূজার কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ভিড় বেশি চোখে পড়ছে।
ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের ‘দেশি দশ’ কর্ণারে অঞ্জন্স-এর ম্যানেজার গৌতম মজুমদার জানান, এবার পূজাতে তারা ফ্যামিলি ম্যাচিং পোশাকে ওপর জোর দিয়েছেন। অর্থাৎ একই ধরনের পোশাক মা এবং মেয়ের জন্য অথবা বাবা এবং ছেলের জন্য। এছাড়া পূজার পোশাকের সাথে মিল রেখে পূজার মটিফে ডিজাইন করা মাস্কও বিক্রি করছেন তারা।
আড়ং-এর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, বরাবরের মতো এবারও পূজাকেন্দ্রিক ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু পোশাকের সংগ্রহ এনেছেন তারা। প্রত্যেক বয়সীর জন্য পূজার আলাদা পোশাক। এসব পোশাক ডিজাইন করার সময় বর্ণিল রং এবং পূজা উৎসবে ব্যবহৃত আল্পনা বা মটিফগুলোকে মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে।
তবে পোশোকের পুরোনো ব্র্যান্ড দেশালসহ অনেক প্রতিষ্ঠানই এবার পূজায় ভালো সংগ্রহ রাখতে পারেনি। এ বিষয়ে দেশালের সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গোমেশ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মাঝের কয়েক মাসে প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় ধরনের লোকসান হয়। ওই লোকসান কাটিয়ে উঠতে সময় লাগছে। যে কারণে পর্যাপ্ত সংগ্রহে একটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
পূজার জন্য কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেনাকাটার বাজেটও এবার তারা ছোট করে এনছেন।
এমন এক ক্রেতা মিথুন সাহা বলেন, ‘এবারের পূজা তো অন্যান্য বারের মতো নয়। এবার করোনার কারণে আত্মীয়দের অনেকেই আর্থিক স্বচ্ছলতায় নেই। এ কারণে কেনাকাটার ক্ষেত্রেও খরচের বিষয়টি মাথায় রাখতে হচ্ছে।’
ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
এদিকে ব্র্যান্ডের পোশাকের বাইরে জামদানি বা বেনারসি শাড়ি এবং একটু ভারি কাজ করা সালোয়ার কামিজের ক্রেতাদের ভিড় করতে দেখা যায় ঢাকার নিউমার্কেট ও গাউছিয়া এলাকার বিপণী বিতানগুলোতে।
শনিবার দিপা গাইন নামের এক ক্রেতা গাউছিয়া মার্কেটে আসেন জামদানি শাড়ি কিনতে। এ সময় তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, পূজায় নারীদের প্রধান পছন্দ শাড়ি। এ ছাড়া রঙিন ও এমব্রয়ডারির কাজ করা সালোয়ার কামিজও অনেকে পছন্দ করেন।
পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতা ও গহণা কিনতেও অনেক ক্রেতাকে ভিড় করতে দেখা যায় এলিফেন্ট রোডের জুতার দোকান ও প্রসাধনীর দোকানগুলোতে। পূজার ক্রেতা আকর্ষণ করতে গত বৃহষ্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু জুতার ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় দেয় বাটা।