মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কোন ধরনের সেবার মাশুল কত, গ্রাহকরা যাতে সহজে জানতে পারেন সে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে গ্রাহকদের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং সেবা গ্রহণে আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করছেন এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, যেকোনো সেবা দেয়ার আগে এর ধরন ও মাসুলের পরিমাণ গ্রাহকদের জানানোর জন্য প্রতিটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপে যথাযথভাবে তুলে ধরতে হবে।
দরকার হলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা মাশুলের তালিকা এবং যেসব প্রশ্নের উত্তর অধিকাংশ গ্রাহক জানতে চান, সেসব প্রশ্নোত্তরের একটি তালিকা তৈরি করে নিজস্ব ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপে তুলে ধরতেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে একজন গ্রাহক আরেকজন গ্রাহককে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি অনেক ধরনের সেবা নিচ্ছেন। এসব সেবার মধ্যে রয়েছে ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ, গ্যাস-বিদ্যুতের বিল পরিশোধ, বিমা প্রিমিয়াম জমা প্রভৃতি।
একেক ধরনের সেবার মাশুল একেক রকম। তা ছাড়া টাকা পাঠানোর খরচ এক রকম, আবার পাঠানো টাকা তোলার খরচ আরেক রকম। মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের পার্থক্যের কারণেও একই সেবা মাশুলের হার ভিন্ন হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হক নিউজবাংলাকে বলেন, অধিকাংশ এমএফএস প্রতিষ্ঠানই এ ধরনের তথ্য প্রদর্শন করছে। তবে সেটা সব ক্ষেত্রে সমানভাবে হচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কেবল ওয়েবসাইটে সেবা মাশুলের তথ্য আছে। কিন্তু মোবাইল অ্যাপে নেই।
এতে গ্রাহকরা অনেক সময় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা।
এই বিভ্রান্তি দূর করতে এমএফএসগুলোকে সংবাদ মাধ্যম (যেমন: পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন) এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (যেমন: ফেসবুক, ইউটিউব চ্যানেল, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন) প্রচার-প্রচারণাসহ সব ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন করসহ (মূসক বা ভ্যাট) সেবা মাশুলের হার উল্লেখ করতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, কোনো এমএফএস প্রতিষ্ঠান যদি সেবা মাশুলের হার পরিবর্তন করে, তাহলে গ্রাহককে অগ্রিম নোটিশ দিয়ে জানাতে হবে।
এতে কেবল মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকদেরই উপকার হবে তা নয়, যেকোনো ব্যক্তিই এই তালিকা থেকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার খরচ সম্পর্কে জানতে পারবে।
বর্তমানে দেশে ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এ ছাড়াও ডাক বিভাগের নগদ নামে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রয়েছে। গত আগস্টে চার লাখেরও বেশি গ্রাহক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করেন।