করোনার কারণে বিশ্বে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও বাংলাদেশের জন্য সুখবর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তাদের পূর্বাভাস বলছে, এ পরিস্থিতিতেও প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশ।
আইএমএফ বলেছে, চলতি বছর বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩.৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার রাতে সংস্থাটির ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়।
প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক থেকে বাংলাদেশের সামনে থাকবে গায়ানা ও দক্ষিণ সুদান।
চলতি বছর গায়ানার প্রবৃদ্ধি ২৬ শতাংশ। দক্ষিণ সুদানের প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ১ শতাংশ হারে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের যৌথ বার্ষিক সভায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৪.৪ শতাংশ হবে। ২০২৩ সালে তা ৭.৩ শতাংশে উন্নীত হবে। অর্থাৎ করোনার আগের অবস্থায় ফিরে যেতে আরও দুই বছর লাগবে।
বড় অর্থনীতির দেশের মধ্য শুধু চীন ছাড়া বাকি সব দেশের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হবে। চীনের প্রবৃদ্ধি বাড়বে ১ দশমিক ৯ শতাংশ হারে।
আইএমএফ বলেছে, বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্য প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হবে। ভারতে চলতি বছর প্রবৃদ্ধি হবে মাইনাস ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। পাকিস্তানে হতে পারে মাইনাস ১ দশমিক ৫ শতাংশ।
মহামারির কারণে চলতি বছর সারা বিশ্বে গড়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি মাইনাস সাড়ে ৪ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে আইএমএফ এখন যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তা আগের চেয়ে বেশি। গত এপ্রিলে আইএমএফ বলেছিল, এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে ২ শতাংশ।
পঞ্জিকাবর্ষে (জানুয়ারি–ডিসেম্বর) জিডিপির হিসাব করে আইএমএফ। বিশ্বব্যাংক ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) হিসাব করে অর্থবছরে।
গত সপ্তাহে বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাসের প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ১.৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেয়।
অন্যদিকে ম্যানিলাভিত্তিক বহুজাতিক দাতা সংস্থা এডিবি প্রাক্কলন করেছে ৬.৮ শতাংশ।
করোনা মহামারিকালে বাংলাদেশের জিডিপি নিয়ে তিন ধরনের পূর্বাভাস দিল বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। যদিও তাদের এসব পূর্বাভাসের সঙ্গে সরকারি হিসাবের অনেক তফাৎ।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রাক্কলন করা হয় ৮.২ শতাংশ। ফলে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের এ হিসাব সরকারের অনুমানের চেয়ে অনেক কম।
অবশ্য বিশ্বব্যংকের পূর্বাভাস গ্রহণ করেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রতিবেদন প্রকাশের পরের দিন সংবাদ মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, জিডিপি নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক, তা বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাদের প্রাক্কলন সঠিক নয়।