ভারতের রফতানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ঋণপত্র (এলসি) খুলেও পেঁয়াজের চালান আনতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। আগামী ৭ অক্টোবর এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অবস্থান স্পষ্ট করবে।
পণ্যটির আমদানিকারকরা আশা করছেন, এর মধ্য দিয়ে অন্তত ২৫-৪০ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসার পথ তৈরি হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রফতানি নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আগাম নোটিশ না দেয়ায় আগেই বিপুল পরিমাণ এলসি খোলা হয়েছিল, যেগুলোর নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। এখন এই উদ্যোগ সবার জন্যই ভালো।’
তিনি বলেন, ৭ অক্টোবরের পর বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আগে খোলা ঋণপত্র অনুযায়ী পেঁয়াজের চালান দেশে আসবে বলে তারা আশা করছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে জাফর উদ্দিন বলেন, ভারতের পেঁয়াজ এলে ভালো। না এলেও বাজারে এর প্রভাব পড়বে না। কারণ সরকার ইতিমধ্যে ১৩টি বিকল্প উৎস থেকে সাত লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। সেই পেঁয়াজ এখন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসতে শুরু করেছে। উড়োজাহাজেও আসবে পেঁয়াজ। তা ছাড়া দেশেও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে।
তিনি বলেন, টিসিবির মাধ্যমে ৩০ টাকায় খোলাবাজারে ও ৩৬ টাকায় অনলাইনে পেঁয়াজ সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং হচ্ছে। সংকট হবে না।
সংকটের আশঙ্কায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর রফতানি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। চার দিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগে খোলা এলসির ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু এক দিন পার না হতেই সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ ভারতের পেঁয়াজ রফতানিকারকদের বরাত দিয়ে শনিবার রাতে নিউজবাংলাকে জানান, আগে এলসি সম্পন্ন হয়েছে, এমন পেঁয়াজ বাংলাদেশে রফতানির অনুমতি চেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পণ্যটির রফতানিকারকেরা মুম্বাইয়ের আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বিষয়টি ফের বিবেচনার উদ্যোগ নেয়।
তিনি জানান, তারা ৭ অক্টোবর সুসংবাদ আশা করছেন। কলকাতার পেঁয়াজ রফতানিকারকেরা এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।
ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার পর অস্থির হয়ে ওঠে বাংলাদেশের বাজার। কয়েকদিনের ব্যবধানে দাম দ্বিগুণের বেশি উঠে যায়।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত আগের এলসির ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ রফতানির খবর দিলে তখন দাম কিছুটা কমে যায়। কিন্তু সেই চালান স্থগিত হয়ে গেলে দাম ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানেই আটকে আছে। এখন স্থান ও মানভেদে পেঁয়াজের কেজি প্রতি খুচরা দাম ৭০-৯০ টাকা।