ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি ও নায়ক শরিফুল রাজ। তবে নানা দ্বন্দ্বে বিয়েটা আর শেষ পর্যন্ত টেকেনি। রাজের প্রতি পরীর এতটাই অনাগ্রহ, রাজের মৃত্যুর পরও নাকি তাকে আর দেখতে যাবেন না তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন পরীমনি। কলকাতায় ‘ফেলু বক্সী’ শিরোনামে একটি সিনেমার শুটিং করছেন নায়িকা
কখনও মনে হয়, ছেলের জন্য শরিফুলকে আরও একটা সুযোগ দেবেন- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নামই মুখে আনতে চাই না। এত ঘৃণা ওর প্রতি। কোনোদিন মরে গেলেও দেখতে যাব না।
‘যে মানুষটা বেঁচে আছে সে অন্য মানুষ, যে আমার কাছে ছিল, সে আরও আগে মরে গিয়েছিল। সেই মৃতদেহটা দেখেছি। আসলে মানুষটা আমার কাছে ‘ডেড’।’
প্রেমে বিশ্বাসী কি না কিংবা আর কখনও বিয়ে করবেন কি না, এ বিষয়ে পরীমনি বলেন, ‘নাহ। আর প্রেমে বিশ্বাস নেই। জীবন থেকে উড়ে গিয়েছে। আমার ছেলেই আমার জীবনের একমাত্র প্রেম। ওর হাসি, কান্না সব কিছুতেই ভালবাসা আছে। ওর আর আমার মাঝে কোনও সংশয় নেই। ও শুধু আমার।’
পরীমনির মনখারাপ কখন হয়? উত্তরে তিনি বলেন, ছেলে যখন অসুস্থ হয়, তখন মনে হয়, জোরে একটা যদি চিৎকার দিতে পারতাম, যাতে হাসপাতালটা ফেটে যেত। ছেলে দুবার হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তখন ওইটুকু বাচ্চার হাতে স্যালাইন লাগানো।
পরীমনি বলেন, ওকে নিয়ে একা একা হাঁটছি। তখন মনে হয়েছিল, এই কষ্টটা আমার একার করার কথা ছিল না। তখন ওই মানুষটার ওপর আরও রাগ হয়। মানছি, বাবারা সব পারে না, কিন্তু দায় কি একা মায়ের?
নায়িকা বলেন, আমাকে যে রকম দেখতে লাগে, আমি সে রকমই। বাইরে ও ভিতরে। আমার মধ্যে কোনও ‘ফিল্টার’ নেই। আমার রাগটাও দেখা যায়। মনখারাপ দেখা যায়, কিছু পুষে রাখি না। এটা অনেকের সঙ্গে চলার জন্য হয়তো ভাল নয়। তবে আমার জীবনটা সিনেমা নয়, অত ‘ফিল্টার’ দিতে পারব না। আমাকে পোষালে ভালো, না পোষালে আরও ভালো।
পরীমনি সাক্ষাৎকারে বলেন, সবাই কারও না কারও কথা শুনে কাজ করে। কিন্তু আমার মনে হয়, ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে তো একটা বস্তু আছে। তাই বলে কারও ক্ষতি করে কিছু করতে আমি চাই না। আমাকে ঘোমটা দিয়ে চলতে হবে কিংবা মেয়ে বলে কোনো কাজ করতে পারব না, এ ধরনের চাপিয়ে দেয়া জিনিস ছোটবেলা থেকে মেনে নিতে পারি না।
তিনি বলেন, আমি যখন এগুলো নিয়ে কথা বলি, লোকে ‘বেয়াদব’ বলে দাগিয়ে দেয়। আমি আসলে এ রকম বেয়াদপ হতে চাই, এ রকমই বেয়াদব থাকতে চাই। যদি নিজের মতো করে বাঁচতে চাইলে বেয়াদব হতে হয়, আমার অসুবিধে নেই।
পরীমনি বলেন, আমি কর্মজগতের কথাটা বলতে পারি। আমাকে নিয়ে যে ভুল ধারণা আছে, সেটা হল, আমি নাকি শুটিং ফাঁসাই (বলেই হাসি)। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লোকে বলে, পরীমনির অনেক প্রেমিক, অনেকগুলো বর। কিন্তু আমি জানতে চাই, তারা কোথায়? আমি নিজেও কথা বলতে গেলে বিব্রত বোধ করি। আগে একটা ধারণা ছিল, বিতর্কিত কিছু নিয়ে কথা বলা যাবে না। কিন্তু আমার মনে হয়, বিতর্কিত বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ালে, সে ব্যাপারে বেশি কথা বলা প্রয়োজন। আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি, যারা আমাকে নিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনি পদক্ষেপ নেব।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আসলে লোকে আমাকে প্রচণ্ড ভুল বোঝে। আমাকে নিয়ে যা কিছু লেখা হয়, সে সব দেখে নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই— এটা কোন পরীমনি! আমার সম্পর্কে আমি এত উদ্ভট তথ্য পাই, নিজেকে নিয়ে ভাবি, ওটা কি আমাকে নিয়ে বলছে ওরা?