কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদেকে ভালোবেসে বিয়ে করে ঘর বেঁধেছিলেন গুলতেকিন খান। তবে বিয়ের দীর্ঘ ৩০ বছর পর দুজনের দুটি পথ দুদিকে চলে যায়; বিচ্ছেদ হয়ে যায় এ দম্পতির।
এরপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। ভিন্নপথে চলতে শুরু করেন হুমায়ূন আর গুলতেকিন। তবু চাওয়া-পাওয়া, জীবনের নানা হিসাব যাদের একটা সময় পর্যন্ত ‘একই’ ছিল, বিনিসুতোয় বাঁধা সে সম্পর্ক কি ভোলা যায়!
হুমায়ূন আহমেদ ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে পাড়ি জমিয়েছেন বহুদূর। এরপর বহু পথ হাঁটতে হয়েছে গুলতেকিনকে। জীবনে চলার পথ থেমে নেই তার। হয়তো এ চলার পথে কখনও কখনও তাই প্রচণ্ড কোনো অভিমানে ক্ষণে ক্ষণে তার গর্জে ওঠে প্রাণ।
মাঝেমধ্যে গুলতেকিন ফেসবুকে পুরনো দিনের কথা তোলেন। অনুসারী আর বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নেন তার অনুভূতি।
এবারও সামনে এনেছেন এমন এক প্রসঙ্গ৷ হুমায়ূন-ভক্তদের জন্যও এ প্রসঙ্গটি বেশ আগ্রহের।
গুলতেকিনকে হুমায়ুন আহমেদের পাঠানো সেই খামের ছবি।
মেহের আফরোজ শাওনের সঙ্গে যখন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ, তখনই গুলতেকিনকে ছেড়ে উত্তরায় আলাদা বাসায় থাকতে শুরু করেন তিনি। এরপর হঠাৎ একদিন আসে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদের ঘোষণা।
কে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন, হুমায়ূন নাকি গুলতেকিন? অনেকেই এখনও ভাবেন, গুলতেকিনই। তবে সে তথ্য নিয়ে ভুল ভাঙিয়ে গুলতেকিন আজ তালাকের নোটিশের ছবি দিয়ে লিখেছেন অজানা কথা। হুমায়ূন আহমেদই পাঠিয়েছিলেন তালাকের নোটিশ।
বহু বছর পর মঙ্গলবার গুলতেকিন একটি চিঠির খাম আর সেই তালাকের নোটিশের ছবি দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এ ধরনের হলদে খামে চিঠি আসলে আমার মেয়ে, শীলা বলতো, এগুলো তোমাকে লেখা প্রেমপত্র। শীলার বাবার লেখা আত্মজীবনিমূলক বই পড়ে অনেকেই আমাকে চিঠি লিখত।
‘জুন মাসের ৬ (২০০৪ সালের) তারিখে স্কুল থেকে ফিরতেই, শীলা বললো, তোমার একটা প্রেমপত্র এসেছে। আমি খামটি খুলতে খুলতে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছিলাম। ওপরে উঠে চিঠিতে চোখ রাখতেই বের হয়ে আসলো একটি কাগজ যেখানে লেখা...।’
গুলতেকিনের শেয়ার করা চিঠির ছবি।
এই পোস্টের পর আরেকটি পোস্টে গুলতেকিন লিখেছেন, ‘আমি হাসতে হাসতে বললাম, শীলা বাবা, তোমার ড্যাডি তো আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে।’
১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের তরুণ শিক্ষক হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কিশোরী গুলতেকিনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আসে এক ছেলে ও তিন মেয়ে।
গুলতেকিনের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের দুই বছর পর ২০০৫ সালে হুমায়ূন আহমেদ বিয়ে করেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে।
অনেকদিন একা থাকার পর ৫৬ বছর বয়সে কবি আফতাব আহমদের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন গুলতেকিন। শাওনকে বিয়ে করার সময় হুমায়ূন আহমেদের বয়সও ছিল ৫৬।
গত বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মারা যান গুলতেকিনের স্বামী কবি আফতাব আহমদ।