অর্ণবের কন্ঠে গানটা প্রাণ পেয়েছিল। এই দেশের অসংখ্য তরুণ তরুণের কাছেও প্রিয় ছিল গানটি। কিছুদিন আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলও জমে গিয়েছিল গানের দুটি শব্দে। ‘হোক কলরব’। অর্ণবের গাওয়া এই বিখ্যাত গানটির গীতিকার রাজীব আশরাফ।
মাত্র ৩৮ বছর বয়সে শুক্রবার জীবনের সব হিসাব ফুরাল ‘হোক কলরব’ গানের এই গীতিকারের। ফুরাল তার জীবন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
রাজীব আশরাফের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন তার বড় বোন আয়েশা বেগম কনক।
শুধু হোক কলরব গানই নয়, লিখেছেন আরও অসংখ্য গান। লিখেছেন বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলও। নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, নাটকও।
তার বড় বোন কনক জানান, রাজীব আশরাফ ছোটবেলা থেকেই অ্যাজমাটিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তাই সব সময় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তার শ্বাসকষ্ট বাড়ে। এরপর নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি জানান, চিকিৎসক তার চেম্বারে দেখে পরামর্শ দেন হাসপাতালে ভর্তির। এরপর তাকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেখানে ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। পরে তাকে আর একটি হাসপাতাল ঘুরে শেষমেষ ভর্তি করানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই শুক্রবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।মিরপুর ১০ নম্বর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
অর্ণবের গাওয়া ‘হোক কলরব’ ছাড়াও ‘ধূসর মেঘ’, ‘ঘুম’, ‘রোদ বলেছে হবে’, ‘একটা মেয়ে’, ‘প্রতিধ্বনি’, ‘মন খারাপের একটা সকাল’, ‘কে আমি’, ‘ইট কাঠ পাথরের’, ‘যখন জোনাক জ্বলে’, ‘নাম ছিল না’, ‘বিভ্রম’ প্রভৃতি রাজীবের লেখা জনপ্রিয় গান। এ ছাড়া ‘ভালোবাসি তাই ভালোবেসে যাই’, ‘এই আমার শহর’, ‘যাযাবর পাখনা’, ‘এই যাত্রার শেষ কোথায় অজানা’, ‘নিঝুম রাতের তারা’, ‘প্রহর’ তার লেখা জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম। ‘ধরেছি রহস্যাবৃত মহাকাল’ তার প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
চলচ্চিত্রের গানও লিখেছেন রাজীব আশরাফ। রেদওয়ান রনির ‘আইসক্রিম’ ছবিতে অর্ণবের গাওয়া বোকা চাঁদ, গানের পাশাপাশি ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রেও আছে রাজিবের লেখা গান।