সিনেমা ও নাটক তথা বড়পর্দা-ছোটপর্দার মধ্যে বিভাজন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বন্যা মির্জা। তার দাবি, ছোটপর্দার তারকা-পরিচালকরা হাল না ধরলে বড়পর্দা অস্তিত্বের সংকটে পড়ত।
মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বন্যা মির্জা লিখেন, ‘বাংলাদেশের বড়পর্দা ছোট হয়ে যেত বহু আগে, যদি ছোটপর্দা থেকে নির্মাতা আর অভিনেতারা এসে কাজ না করতেন। অভিনয় মানের কোনো মিনিমাম প্রতিযোগিতা থাকত না তাহলে। কয়েকজন মানুষকে নিয়ে কোনো কারখানা চলে না। আর চলে না বলেই ভিন্ন দেশ থেকে লোকজন ধার করতে হয়। বাংলাদেশের সিনেমা চাঙ্গা হতে ছোটপর্দার নির্মাতা ও অভিনেতার দরকার হয়েছে। আর তা ছাড়া চলচ্চিত্র একটা বড় মাধ্যম। এতে একটা কোনো নির্দিষ্ট ব্যাকগ্রাউন্ডের লোক কাজ করেন না কোনো দেশেই। থিয়েটার, মিউজিক আর লিটেরেচার থেকে তো আসেনই; আসেন টিভি রেডিও থেকেও। আর এটাই হলো সিনেমার ইতিহাস।’
তিনি মনে করেন চলচ্চিত্রের ইতিহাসটা সবাই ভুলতে বসেছেন।
তিনি আরও লিখেন, ‘মনে হয় ইতিহাসটা সকলেই ভুলতে বসেছেন। আবোল-তাবোল সব তর্ক করলে তো ইতিহাস বদলাবে না, গায়ের জোর দেখানো হবে। গোলাম মুস্তাফা সুপারস্টার তো ছিলেন বটেই, এমনকি খলিলও ছিলেন। নায়কদের মধ্যে কেবল না, তখন সুপারস্টার ছিলেন খলনায়ক, কৌতুকাভিনেতা, প্লেব্যাক সিংগার, এমনকি চিত্রগ্রাহকের মধ্যেও। বুঝতে অসুবিধা হলে বেবি ইসলামদের মতো মানুষের নাম মনে করুন। জিজ্ঞাসা করুন পুরানদের। ঢাকার কালচারের অভিজাত ছিলেন এরা সকলেই। এবং অভিজাতরাও সিনেমায় যেতেন এদেরই কারণে।’
বন্যা মির্জা লিখেন, ‘সো-কলড কাটপিস, অশ্লীল (শব্দটা খুব খারাপ যদিও) দিয়ে যখন সিনেমা কোনোমতে চলে, হল সব যখন বন্ধ হতে শুরু করেছে, তখন সেই কারখানা যতটুকু দাঁড়ালো তা ছোটপর্দার নির্মাতা আর অভিনেতাদের হাত ধরে। কেউ এটা অস্বীকার করলে কিছুমাত্র যাবে আসবে না। সময়টার দিকে ঘুরে দাঁড়ালে এটাই বোঝা যাবে। ঠিক তেমনি করেই যারা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম নির্মাণ করেন তাদেরও অবদান আছে। সিনেমা কারখানা কারও একক মালিকানাধীন নয়।’
তিনি আরও লিখেন, ‘‘এটাও বলতে চাই যে ‘অশ্লীল’ শব্দটা শুনতেই বেঠিক লাগে কানে। বিশেষ করে যখন নায়িকাদের বা নারী অভিনেতাদের নামের সাথে বলা হয়। সব কিছুর সীমা থাকা উচিত! যাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ। কারণ এটা করেছেন বাংলাদেশের সিনেমা নির্মাতারা। যারা পর্দাতে এসেছেন তাদের কোনো ত্রুটি নেই। তারা কেবল কাজ করেছেন। তারা ম্যানুপুলেটেড হয়েছেন। নিরুপায় হয়ে কাজ করেছেন। তাদের নামের সাথে এই সব ট্যাগ করা বিশেষণ আরও একবার ম্যানিপুলেশন, এবিউজ। সিনেমা কারখানা যেহেতু পুরুষের দখলে তাই নারীদের কোনো দায়ভার নেই।’’