ইউটিউবার ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদিরের স্ত্রী দিশা ইসলামকে নিয়ে কদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা। আগের ব্যক্তিজীবন, বিয়ে ও সন্তানের প্রসঙ্গ আসছে সামনে। তবে এসব নিয়ে কিছুই ভাবছেন না সালমান। বরং তার মতে, স্ত্রী তার কাছে একজন রানি। একটা রাজ্য ছেড়ে এই রানি এসেছেন তার কাছে।
ফেসবুকের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে শুক্রবার বিকেলে স্ত্রীর সঙ্গে একটি ভিডিও পোস্ট করে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।
সালমান লিখেছেন, অনুগ্রহ করে আমার স্ত্রীর সত্যিকারের যোগ্যতা এবং গুণাবলী না জেনে খবর এবং পোস্ট শেয়ার করবেন না। সে একজন দুর্বল অসহায় নারী নয় যে আমার হাত ধরেছে। সে একজন রানি যে আমার জন্য তার রাজ্য ছেড়েছে। তোমরা আমার স্ত্রীকে জানো না। তোমরা জানো না যে, সালমান মুক্তাদিরের স্ত্রী হতে কী লাগে।
এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর লিখেছেন, একজন রানির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত গুণাবলী এবং শক্তিসহ সে একজন রানি। মাশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের ওপর তার রহমত বর্ষণ করুন এবং আমাদের সমস্ত নেতিবাচকতা এবং বিষাক্ততা থেকে দূরে রাখুন। আমরা খুব খুশি।
সালমান ফেসবুকে লিখেছেন, আমি সবসময় বিয়ে করতে চেয়েছি। যদি কোনো প্রতিশ্রুতি বিবাহের দিকে না নিয়ে যায় তবে আমি কখনই সেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করতে পারি না। কেন একজনের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া উচিত? যদি তারা আজীবন প্রতিশ্রুতিবব্ধ সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়, তবে কেন এত প্রচেষ্টা করা উচিত?
তিনি লিখেছেন, আগে একজন ক্রমাগত আমাকে অপেক্ষা করিয়েছে এবং অবশেষে বিয়ে করেনি। অন্য একজন আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং ‘তুমি আরও ভালো কাউকে ডিজার্ভ করো’ বলে সম্পর্কটি শেষ করেছিল। অন্য একজন বলল সে প্রস্তুত নয়। অবশেষে আমি শিখেছি যে সবাই আপনাকে বিয়ে করতে চায়, এটা শুধু কথাই।
সালমান লেখেন, তারপর আমার স্ত্রীর সঙ্গ দেখা হলো। আমরা বন্ধু হলাম। এর পর থেকে সে কখনও আঘাতমূলক বা অসম্মানজনক কিছু বলেনি। সে সবসময় আমাকে মানুষের সামনে সম্মানিত করেছে, যেখানে অন্যরা আমাকে নিচে নামানোর চেষ্টা করেছিল।
তিনি লিখেছেন, প্রতিটি ওলটপালট মেয়ে একটি ছবি তুলতে এবং চারপাশে বলতে চেয়েছে আমাকে নিয়ে। আমার স্ত্রী কখনো আমার সাথে ছবি তোলেনি। সবসময় শুধু আমার সাথে কথা বলার এবং তার গল্প শেয়ার করার জন্য উন্মুখ ছিল সে। অবশেষে আমরা প্রেমে পড়ে গেলাম।
সালমান লিখেছেন, সিনেমার মতোই সবাই আমাদের বিপক্ষে ছিল। সাত মাস ধরে আমার স্ত্রী অনেক সংগ্রাম করেছে এবং নরকের মধ্য দিয়ে গেছে। এমন কয়েক সপ্তাহ এবং মাস আছে যেখানে সে আমাকে টেক্সট বা কলও করেনি। আমি ভাবলাম এটা আমার প্রেম জীবনের আরেকটি ব্যর্থতা। মাসের পর মাস তাকে দেখতে পাইনি।
তিনি লিখেছেন, তারপর অবশেষে সাত মাস পর আমাদের বিয়ের ঠিক আগে সে তার এক বন্ধুকে দিয়ে আমাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করলো- সে যদি সবকিছু ছেড়ে বাচ্চাদের সাথে তোমার দরজায় হাজির হয়, তুমি কি তাকে মেনে নিতে পারবে? নাকি এটা তোমার জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে?
সালমান লিখেছেন, আমার সিদ্ধান্ত নিতে ২৪ ঘন্টারও কম সময় ছিল। আমাকে কেবল স্বীকার করতেই হয়েছিল, এখনকার দিনে তার মতো এত শক্তিশালী কোনও ভালোবাসা নেই। আমি কখনই এমন কাউকে পাব না, যে সালমান মুক্তাদিরের মতো লোকের জন্য সবকিছু ছেড়ে দেবে।
এই ইউটিউবার লিখেছেন, আমার স্ত্রী আমার হৃদয় দেখে, আমার আত্মা দেখে, আমাকে মানুষ হিসেবে সম্মান করে, সে তার সবকিছু দিয়ে আমাকে ভালবাসে। সে আমার জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে ইচ্ছুক ছিল। এই নারী এত শিক্ষিত, এত স্মার্ট এত জ্ঞানী, এত শক্তিশালী। আর এমন একজন নারী আমাকে তার জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল বিয়ে করেন সালমান ও দিশা। ফেসবুকে এক পোস্টে ২ মে দুপুরে এ তথ্য দেন তিনি নিজেই। তবে ওই পোস্টে স্ত্রীর নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
বরের পোশাকে স্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন সালমান। লেখেন, ‘সালমান মুক্তাদির-এর সমাপ্তি -৩০.০৪. ২০২৩। সারা জীবনের জন্য আমার প্রিয় স্ত্রী।’
সালমানের পোস্টে কমেন্ট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই। এ তালিকায় আছেন বিখ্যাত ফেসবুক সেলিব্রেটিরা।
চিত্রনায়িকা পরীমনি ইনস্টাগ্রামে সালমানের বিয়ের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘অভিনন্দন সালমান।’ অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘অভিনন্দন।’
কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও শিক্ষক আয়মান সাদিক বলেছেন, ‘এই দিনটা দেখতে পাব ভাবিনি। তোমাকে খুশি দেখে খুব ভালো লাগছে। সুখী ও শান্তিপূর্ণ যাত্রা কামনা করছি।’
কনটেন্ট ক্রিয়েটর মুনজেরিন শহীদ লিখেছেন, ‘অভিনন্দন ভাইয়া ও অপু! তোমাদের দুজনের জন্যই খুব খুশি। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উভয়ের সামনে শান্তিময় ও সুখী জীবন দান করুন।’
একাধিক সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, ২০১১ সালে দিশার প্রথম বিয়ে হয়। সে বছর আসে তার প্রথম সন্তান। ২০২১ সালে দিশা দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন।