বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গারো পাহাড়ের পিকনিক স্পটে দর্শনার্থীর ঢল

  •    
  • ২৩ এপ্রিল, ২০২৩ ১৮:৪০

শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, ‘গজনীতে নতুন নতুন অনেক রাইডস সংযোজন হওয়ায় এবারের ঈদের ছুটিতে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে। আরও অনেক কাজ চলমান। জেলা ব্র্যান্ডিং কর্নার তৈরি হচ্ছে। সেখান থেকে শেরপুর জেলার ব্র্যান্ডিং করা জিনিসগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দর্শনার্থীরা সংগ্রহ করতে পারবে এবং পরিচিত হবে।’

রোজার কারণে এক মাস ফাঁকা ছিলো পর্যটন কেন্দ্রগুলো। রোজা শেষে ঈদের ছুটিতে সারাদেশ থেকে শেরপুরের উত্তরে বিস্তৃত গারো পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে গজনী অবকাশ ও মধুটিলা ইকোপার্কে দলে দলে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা।

গজনী অবকাশ কেন্দ্রে নতুন করে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু, ওয়াটার পার্ক, ওয়াটার কিংডম ও প্যারাডোবা, ঝুলন্ত ব্রীজ, রোপওয়ে, জিপলাইনার, ক্যাবল কার, প্যাডেল বোট, সাম্পান নৌকা, ঝর্ণাধারাসহ আকর্ষণীয় রাইডস মন কাড়ছে ভ্রমণ পিপাসুদের। সীমান্তের এপার-ওপারের পাহাড়গুলোর লুকোচুরি খেলা তো আছেই।

পাশাপাশি বন বিভাগ গড়ে তুলেছে মধুটিলা ইকোপার্ক নামে পর্যটন কেন্দ্র। এখানে রয়েছে ওয়াচ টাউয়ার, প্যাডেল বোট, মিনি চিড়িয়াখানাসহ বিভিন্ন রাইডস।

এছাড়া শেরপুরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন রিসোর্ট ও ক্যাফে। এসকব জায়গা এখন দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর। দর্শনার্থী বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের বেচাবিক্রিও জমে জমজমাট।

রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, দর্শনার্থীরা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনযোগে এসে ভিড় করছেন পর্যটন কেন্দ্রে। বাস, লেগুনা, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে করে আসতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের। যানবাহনগুলোর মধ্যে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও লেগুনার সংখ্যা বেশি ছিলো। আর এসব যানবাহনের জ্যাম লেগে আছে গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রের বাইরের দুই কিলোমিটার রাস্তায়। নতুন নতুন রাইডস হওয়ায় দর্শনার্থীতে মুখরিত পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পাহাড়ে সবুজের হাতছানি পেতে ছুটে আসছেন তারা।

শ্র‍ীবরদী থেকে আসা আফরা নাওয়ার হিলালী বলেন, ‘ঈদে বাবা-মার সাথে ঘুরতে এসেছি। অনেক লোকজন হয়েছে। প্যাডেল বোটে উঠলাম। অনেক মজা করলাম।’

ঈশ্বরগঞ্জ থেকে আসা ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘সবুজে ছেয়ে আছে গোটা গারো পাহাড়। নানা গাছে ফুটেছে বিভিন্ন ধরনের ফুল। আগেরবারের চেয়ে নতুন অনেক রাইডস হয়েছে। খুব ভালো লাগছে।’

জাতীয় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গীতা বলেন, ‘ঈদের পরদিন বন্ধুদের সাথে কলেজ থেকে ঘুরতে এসেছি। নতুন নতুন অনেক রাইডসে উঠলাম। অনেক কিছু কেনা-কাটাও করলাম। দারুণ লেগেছে শেরপুরের গারো পাহাড়।’

ঢাকা থেকে আসা আহসান রুবেল বলেন, ‘প্রতি বছরই ঈদে বন্ধু-বান্ধব মিলে এখানে আসি। কারণ ঈদেই আমরা একটু ফ্রি থাকি। অনেক ভালো লাগে গারো পাহাড়।’

ঢাকা থেকে আসা মমিন বলেন, ‘গজনীতে আসার ইচ্ছে ছিল অনেক আগে থেকেই। কিন্তু কোনো সময় আসা হয়নি। এবার আসলাম, ঘুরে দেখলাম। খুব ভালো লাগল। এবারের ঈদটাকে এখানে এসে কাটাতে পেরে আরও প্রাণবন্ত লাগল।’

পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, যেভাবে দর্শনার্থী আসছেন এটা অব্যাহত থাকলে লাভবান হবেন তারা।

কাপড় ব্যবসায়ী রাহিম বলেন, ‘এখন গরম। তাই নতুন করে কাপড় তুলেছি। বেচা-কেনা হচ্ছে। এমন করে কয়েকদিন লোকজন ‌এলে ভালো বেচতে পারবো।’

পর্যটন কেন্দ্রের ইজারাদার ফরিদ আহম্মেদ বলেন, শীতে মোটামুটি ব্যবসা হয়েছে। কিন্তু রোজা এসে পড়ায় আবার এক মাস বন্ধ ছিলো। এখন ঈদের ছুটিতে লোকজন আসা শুরু করেছে। যদি সাতদিন এমন পরিমাণ লোক আসে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব।’

পর্যটন কেন্দ্রের গারো মা ভিলেজ নামের রাইডস ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘এবারের ঈদের ছুটিতে অনেক পর্যটক আসছে। আজ সকাল থেকেই অনেক পর্যটক আসছে। এভাবে পর্যটক এলে আমরা কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পারব।’

রাইডস ইজারাদার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা রাইডসগুলোকে নতুন রূপে সাজিয়েছি। এতে দর্শনার্থীরা আকৃষ্ট হচ্ছে। এক মাস বন্ধ থাকায় পাহাড়ের প্রকৃতিও সুন্দরভাবে সেজেছে। এবার ঈদে দর্শনার্থীর সমাগম বেড়েছে। আমরা রোজায় বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।’

শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, ‘গজনীতে নতুন নতুন অনেক রাইডস সংযোজন হওয়ায় এবারের ঈদের ছুটিতে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হচ্ছে। আরও অনেক কাজ চলমান। জেলা ব্র্যান্ডিং কর্নার তৈরি হচ্ছে। সেখান থেকে শেরপুর জেলার ব্র্যান্ডিং করা জিনিসগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দর্শনার্থীরা সংগ্রহ করতে পারবে এবং পরিচিত হবে।’

তিন বলেন, ‘আমরা গজনী অবকাশ কেন্দ্রের অনেকটাই উন্নয়ন করেছি। এখানে সারা বছর যেন দর্শনার্থীর সমাগম থাকে এজন্য আলাদা কিছু রাইডস করা হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে শেরপুরের পর্যটন কেন্দ্রগুলো নানাভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

‘গারো পাহাড়ের সব পর্যটনকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদারসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আর এ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপদেই আনন্দ উপভোগ করছে দর্শনার্থীরা। সাথে অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর