প্রথমবারের মতো খুলনায় একটি ছবির প্রিমিয়ার শো হতে চলেছে। শুক্রবার বিকেল ৪টায় খুলনার শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই শো অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনার প্রান্তিক মানুষের যাপিত জীবনের কাহিনী নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্যের সিনেমা ‘নোনা পানি’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন খুলনার মেয়ে সৈয়দা নিগার বানু। প্রয়োজনা করেছে বেঙ্গল চলচ্চিত্র উন্নয়ন ফোরাম।
বুধবার খুলনা প্রেস ক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এ উপলক্ষে সাংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে কথা বলেন ছবির পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শুভজিত রায় এবং চলচ্চিত্র শিল্পী রুবল রোদী।
নোনা পানি ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত
নোনা পানির কাহিনী বর্ণনায় পরিচালক বলেন, ২৮ বছর বয়সী স্বামী পরিত্যক্তা রোম্বা ভয়াল ঘূর্ণিঝড় আইলার শিকার হয়ে জীবনধারণের আশায় অন্য গ্রামে অভিবাসিত হয়েছে। সেই গ্রামটি চিংড়ি চাষের প্রতিক্রিয়ার শিকার।
মানুষগুলো তাদের বাপ-দাদার কৃষিভিত্তিক পেশা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মাটি ও পানি অত্যধিক লবণাক্ত হওয়ায় সেখানে শস্য ফলানো প্রায় অসম্ভব। নদী থেকে চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করাই তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
৪০ বছরের দশপাই পুরুষ না নারী এই দ্বিধা রয়েছে গ্রামের মানুষদের মধ্যে। তার চরিত্রটি রহস্যময়। বাইরের জগতের সঙ্গে তার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম রেডিও। রেডিওতে মগ্ন এই চরিত্রটি পৃথিবীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। সে অবলীলায় যেমন কীর্তনের সঙ্গে সুর মেলায় তেমনি নেচে ওঠে লাতিন বা ফরাসি বাজনার সঙ্গে।
২৫ বছর বয়সী কৃষ্ণা যাত্রাদলের পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী। সুরেলা একটি গলা থাকলেও তার শরীরটা মোটেও আকর্ষণীয় নয়- বড্ড ছোট তার স্তন দুটো। এই খামতির জন্য সে যাত্রাপালার নায়িকা হতে পারে না।
রোম্বা, দশপাই ও কৃষ্ণারা তাদের নিঃসঙ্গতা, অসহায়ত্ব, জেদ আর টিকে থাকার লড়াইয়ের সূত্রে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। তারা সবাই চায় গ্রামে থিতু হতে, চায় আত্মপরিচয়। এই আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দিতে গিয়ে তারা কখনও কখনও নিজ নিজ জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চায়। ছুঁড়ে ফেলতে চায় অসহায়ত্বের ঘেরাটোপ।
এসব চরিত্র নিয়েই গড়ে উঠেছে চলচ্চিত্র ‘নোনাপানি’। চলচ্চিত্রটির বর্ণনার কাঠামো বহুস্তরীয় ও বহুমাত্রিক।