১৬ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে আলোচিত সিনেমা অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার। জেমস ক্যামেরনের বানানো অ্যাভাটার মুক্তির ১৩ বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে এর দ্বিতীয় কিস্তি।
সিনেমাটি দেখে এর রিভিউ লিখেছেন ওয়েন গ্লিবারম্যান। ভ্যারাইটিতে রিভিউটি প্রকাশ পেয়েছে মঙ্গলবার। লেখায় স্পয়লার অ্যালার্ট দিয়েছেন তিনি।
ওয়েন গ্লিবারম্যান লিখেছেন, জেমস ক্যামেরন তার অ্যাভাটার সিনেমায় যে ভিস্যুয়াল ইফেক্ট দেখিয়েছিলেন, তা ছিল দুর্দান্ত। এক কথায় সিনেমাটির বিষয়ে বলতে গেলে অনেক শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন- দ্যুতিময়, মুগ্ধকর, চমকপ্রদ।
কিন্তু অ্যাভাটার মুক্তির ১৩ বছর পর যে শব্দটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করতে ইচ্ছে হচ্ছে, সেটি হলো ‘জলজলে’।
প্যান্ডোরার সেই আদিম বন, ভাসমান-পর্বত, ল্যান্ডস্কেপ যা সিনেমায় দেখানো হয়েছিল, তা ছিল একরকম নেশার মতো, রুপকথার মতো। সেটা এমন একটা জায়গা ছিল, যেখানে থাকতে ইচ্ছে হয়েছিল দর্শকদের। এমনকি সেখানে যে গল্পটি তৈরি হলো, সেই গল্পটিও ঠিকই মনে হলো সবার কাছে।
অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার সিনেমাটি ক্যামেরনের আরও বড়, এবং আরও বেশি চমকপ্রদ। প্যান্ডোরায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে ক্যামেরন সিনেমায় আগের প্রযুক্তিকে আরও তীক্ষ্ণ বানিয়ে ব্যবহার করেছেন।
থ্রি-ডি দৃশ্যগুলো এবার আরও কৌশলী হয়ে নেয়া হয়েছে। সেগুলোকে ব্যাখ্যা করতে চাইলে বলতে হবে ‘হাইপারক্লিয়ার’।
ওয়েন গ্লিবারম্যান অনুভূতির বিচারে অ্যাভারটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার সিনেমাকে প্রাণহীন বলেছেন। অনুভূতিটা আরও ভালো করে বোঝাতে তিনি এর তুলনা করেছেন পিটার জ্যাকসনের হবিট সিনেমার অনুভূতির সঙ্গে।
ওয়েন বলছেন, ‘অ্যাভারটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার একটা অভিজ্ঞতা, যেটি আপনাকে সিনেমাটির চরিত্রগুলোর সঙ্গে সিনেমাতে দেখানো স্থানগুলোতে থাকার অনুভূতি দেবে।’
সিনেমার অনেক দৃশ্যই দর্শকের চোখ বড় বড় করে দিতে পারে, মাথা ঘুড়িয়ে দিতে এবং হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিতে পারে।
সিনেমাটিতে আট’ওয়া আট্টু নামের একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় দ্বীপ দেখানো হয়েছে। যেখানে জ্যাক সুলি (স্যাম ওয়ার্থিংটন) থাকেন এবং তিনি সেখানকার না’ভি বিদ্রোহের নেতা। সুলির স্ত্রী নেইতিরি (জো সালদানা) এবং তাদের চার সন্তান।
সিনেমায় সুলির বিপক্ষ দল হলো ‘স্কাই পিপল’। যারা প্যান্ডোরাকে উপনিবেশ করার চেষ্টা করছে, যেন পৃথিবীর মানুষ ভবিষ্যতে সেখানে থাকতে পারে।
দ্বীপটিতে এক পর্যায়ে জ্যাক এবং তার পরিবার মেটকাইনা গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট করে। মেটকাইনা গোষ্ঠীও জলজ পরিবেশে বাস করা অ্যাভাটার এবং অনেকটা না’ভিদের মতো দেখতে।
এ দুই জাতি কিশোর-কিশোরীরা তাদের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে একত্র হয়। সমুদ্রের মধ্যে লম্বা গলার প্রাণীদের ঘারে চড়ে বেড়ায়। যখনই সিনেমাটির দৃশ্য সমুদ্রের গভীরে চলে যায়, তখন সিনেমাটি পানির নিচের জীবন যাত্রায় পরিণত হয়।
দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার সিনেমার নির্মাণ খরচ ৩৫০ মিলিয়ন ডলার। সিনেমাটিকে ব্রেক ইভেনে নিয়ে যেতে হলেও সর্বকালের সেরা তিন বা চারটি সিনেমাগুলির মধ্যে একটি হতে হবে।
ওয়েন বলছেন, ‘ক্যামেরন এ সিনেমায় শুধু তার শিল্প দক্ষতাই তুলে ধরেননি, সঙ্গে তার মঞ্চায়নের ছন্দকেও প্রমাণ করেছেন। সিনেমাটি দেখে নিশ্চয়ই বিশ্ব বলবে: থ্রিল রাইডটি কেমন লাগে সেটা আমরা জানতে পেরেছি।’
মূল অ্যাভাটারের চেয়ে দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার এর ক্লাইম্যাক্স আরও বেশি ভারী বলে দাবি করেছেন ওয়েন।
রিভিউয়ের শেষে ওয়েন গ্লিবারম্যান দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার সিনেমাকে মহিমান্বিত করাটাকে কৌশলগত ভুল বলে উল্লেখ করেছেন।
দ্য ওয়ে অফ ওয়াটারের বেশ কিছু দৃশ্য ও মুহূর্ত দেখে ওয়েনের মনে পরে গেছে ক্যামেরনের বানানো টাইটানিক সিনেমার কথা। কৌশলগত ভুলের কারণ ব্যাখ্যা করে ওয়েন বলেছেন, ‘টাইটানিক একটি চমকপ্রদ সিনেমা ছিল, যার চরিত্রগুলি স্পর্শ করেছিল কোটি মানুষের হৃদয়। আমি দুঃখিত, কিন্তু যখন আমি দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার দেখেছিলাম তখন আমার সঙ্গে ছিল শুধু আমার চোখ।’